তালেবানদের গায়ে সেনার পোশাক আর বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। পায়ে বুট, হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র। এখন থেকে এভাবেই তালেবানে যোদ্ধাদের এলিট ফোর্সকে দেখা যাবে। তালেবান প্রশাসন এই এলিট ফোর্সের নাম দিয়েছে বদরি-৩১৩।
পোশাকি নাম, ‘বদরি-৩১৩ ব্যাটালিয়ন’। মুসলমানদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স) এর সময়ে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধের স্মৃতিতেই ইসলামের এই যোদ্ধাবাহিনীর নামকরণ করেছে তালেবান। ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (স) মাত্র ৩১৩ জন যোদ্ধাকে নিয়ে মদিনার অদূরে বদর উপত্যকার যুদ্ধে হারিয়েছিলেন বিশাল কুরাইশ বাহিনীকে। সেই যুদ্ধের স্মরণেই তালেবানের এই নতুন ও অত্যাধুনিক বাহিনীর নামকরণ।
আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর তালেবান প্রশাসন এই প্রথমবারের মতো তাদের স্পেশাল ফোর্স-বদরি-৩১৩ কে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিশ্বাবাসীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি তালিবানের তরফে এই ‘স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স’- এর ছবি এবং ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তাদের শারীরিক কসরত এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ-পর্ব দেখানো হয়েছে। আধুনিক অস্ত্রের পাশাপাশি, হাল আমলের ‘ম্যানপ্যাক’, ‘নাইট ভিশন’ এমনকি, গ্যাস মুখোশও রয়েছে তাদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ফোর্সের ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে একটা বার্তা দিতে চাইছে তালেবান। তালেবান প্রশাসন বোঝাতে চাইছে আগের তুলনায় বর্তমান তালেবান অনেক গুন বেশি শক্তিশালী।তালেবান বিশ্ববাসীকে বোঝাতে চেয়েছে, তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্র মজুদ রয়েছে। তাদের হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক হবে না।
তালেবান এখন বেশি আধুণিক ও শক্তিশালী। এতকাল সাধারণত যে পাঠানি পোশাকে তালেবান যোদ্ধাদের দেখা যেত, এখন তারাই পরেছে সামরিক বাহিনীর পোশাক। পায়ে বুট। বিভিন্ন দেশের স্পেশ্যাল ফোর্সের জওয়ানদের মতো তাদেরও মুখ ঢাকা বিশেষ মাস্কে।
আগে তালেবান যোদ্ধাদের হাতে রাশিয়ার কালাশনিকভ দেখা গেলেও এখন তাদের হাতে দেখা যাচ্ছে এমফোরের মতো মার্কিন সেনাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র। চোখে নাইটভিশন চশমা। তালেবানের দাবি, আফগানিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চল এবং মরুভূমিতে যুদ্ধের জন্য বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত এই বাহিনী। তবে কারা তাদের এই প্রশিক্ষণ দিয়েছে-এটি এখন মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।
পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের একাংশের অনুমান, বলছে তালেবানের এই স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স গঠনের নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের এসএসজি (স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ) কমান্ডোরা। ‘বদর-৩১৩ ব্যাটেলিয়ন’কে অস্ট্রিয়ান গ্লক পিস্তল, আমেরিকান এম-৪ কার্বাইন, ব্যারেট স্নাইপার রাইফেল, কাঁধে তুলে ছোড়ার উপযুক্ত আনজা সিরিজের বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রও তারাই জুগিয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া