ভারতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট শুরু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২৭, ২০২১, ১০:১০ এএম

ভারতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট শুরু

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের আট ধাপে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার (২৭ মার্চ) কড়া নিরাপত্তায় ৫ জেলার ৩০ টি আসনে শুরু হওয়া এই ভোটগ্রহণ সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। করোনা পরিস্থিতির কারণেই এ বার ভোটগ্রহণের সময় ৩০ মিনিট বাড়িয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।

পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর, কাঁথি উত্তর, ভগবানপুর, খেজুরি, কাঁথি দক্ষিণ, রামনগর এবং এগরাতে ভোট হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, কেশিয়াড়ি, খড়্গপুর, গড়বেতা, শালবনি এবং মেদিনীপুর কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ রয়েছে এই দফায়। ঝাড়গ্রামের বিনপুর, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে। পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি, বলরামপুর, বান্দোয়ান, জয়পুর, পুরুলিয়া, মানবাজার, কাশীপুর, পারা ও রঘুনাথপুর কেন্দ্রে এবং বাঁকুড়ার রাইপুর, রানিবাঁধ, ছাতনা ও শালতোড়াতেও ভোট প্রথম দফায়।

প্রথম দফার ভোটে মোট ১০ হাজার ২৮৮টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা বলে চিহ্নিত অঞ্চলগুলিতেও এবার নির্বাচন হচ্ছে। সে কারণে আলাদা করে নিরাপত্তার দিকে নজর দিয়েছে কমিশন। বাঁকুড়া জেলার ৪টি আসনের জন্য বাহিনী রয়েছে ৮৩ কোম্পানি বাহিনী। ঝাড়গ্রামের নির্বাচন হওয়া ৪টি আসনে কেন্দ্রীয় বাহিনী ১৪৪ কোম্পানি মোতায়ন করা হয়েছে। আর পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে বাহিনী যথাক্রমে ১৪৮ এবং ১২৪ কোম্পানি বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরাপত্তা বজায় রাখতে সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছে কি না, তা দেখার জন্য ৩ জন বিশেষ পর্যবেক্ষককেও নিয়োগ করেছে কমিশন।

সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে পটাশপুর ও খেজুরিতে। খেজুরির বটতলা এলাকায় বোমাবজির অভিযোগ ওঠে। বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, তাদের মারধর করেছে তৃণমূল। খেজুরির এক নম্বর ব্লকের বীরবন্দ এলাকায় তৃণমূল বুথ কর্মীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। শালবনিতে সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী সুশান্ত ঘোষ অভিযোগ করেন, শুইমাদহ স্কুলের বুথে মোর্চার এজেন্টদের বসতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই নিয়ে তৃণমূলের বুথকর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে সুশান্তের।

অন্যদিকে, ভোট শুরুর আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে কেশিয়াড়ি বিধানসভার বেগমপুর এলাকা। বিজেপি-র নির্বাচনি কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। কেশিয়াড়ী বিধানসভার অর্জ্জুনগেড়িয়া ২২১ নং বুথে ইভিএম মেশিন খারাপ, ভোট বন্ধ হয় সকাল থেকেই। শাবড়া বাপুজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০০ মিটারের মধ্যে জমায়েতের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।শনিবার ভোটগ্রহণ পর্বে তাই বিজেপি-র লক্ষ্য থাকবে লোকসভা নির্বাচনের ধারা জিইয়ে রাখা। অন্যদিকে, তৃণমূলের লক্ষ্য হারানো জমি পুনরুদ্ধার।

আট দফায় ভোট হওয়ায় অবশ্য এমনিতেই খুশি নয় তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘আট পর্বের নির্বাচন কাকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য? আমি বিজেপি সূত্রে যা জেনেছি, তা হলো, বিজেপি যা ঠিক করে দিয়েছে, সেভাবেই ভোট হচ্ছে। বিহারে যদি কম পর্বে ভোট করা হয়, কেরালা, তামিলনাড়ুতে যদি এক পর্বে ভোট করা হয় তো পশ্চিমবঙ্গে কেন আট পর্বে।’

মমতার দাবি, ‘যেসব জেলায় তৃণমূলের প্রভাব বেশি, সেসব জেলায় দুই থেকে তিন পর্বে ভোট করা হচ্ছে। আমি বাংলার মেয়ে। বাংলাকে ভালো করে চিনি। বিজেপি যা খুশি করতে পারে, সব চক্রান্ত ভেঙে দেবো। বাংলার মানুষ বাংলা শাসন করবে। নির্বাচন কমিশনকে বলবো, বিজেপি-র চোখ দিয়ে বাংলাকে দেখবেন না।’অন্যদিকে বিজেপি-র দাবি, নিরাপত্তা বিবেচনায় এতগুলো পর্বে ভোটগ্রহণ জরুরি।

সূত্র: আনন্দবাজার।

Link copied!