পুতিনকে কূটনৈতিক পথে যেতে বললেন বাইডেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২, ১০:২৯ এএম

পুতিনকে কূটনৈতিক পথে যেতে বললেন বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েই ইউক্রেনে হামলা চালাতে যাচ্ছে রাশিয়া। পরমানু শক্তিধর প্রতিপক্ষ মস্কো এখন হামলা শুরু করার একটা ‘প্রিটেক্স’ বা অজুহাত খুঁজছে বলে মনে করে পশ্চিমারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারী বাসভবন এবং দপ্তর হোয়াইট হাউজ থেকে টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে বাইডেন বলেছেন, “আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে ইউক্রেনে হামলা চালানোর বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট মি.পুতিন একরকম সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছেন। হামলাটি যেকোন সময়ই হতে পারে।” ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে টার্গেট করে হামলা শুরু হবে; মার্কিন গোয়েন্দাদের এমন তথ্যের উপর ভিত্তি করেই এ বিষয়ে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন মনে করেন, ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে দেড় থেকে দুই লাখের মত রুশ সৈন্য জড়ো করা মোটেও স্বস্তিদায়ক খবর নয়।

সৈন্যদের সঙ্গে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডোনেটসক এবং লুহান্সক অঞ্চলের রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় থাকা রুশপন্থীরা রয়েছেন বলে দাবি মার্কিন গোয়েন্দাদের। চলমান উত্তেজনার মধ্যে শনিবার ব্যালিস্টিক ও ক্রজ ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছে রাশিয়া। তবে যুদ্ধের পথে না গিয়ে সংকট সমাধানে পুতিনকে কূটনৈতিক পথ বেছে নিতে আহবান জানিয়েছেন বাইডেন। বাইডেন মনে করেন, “সংকট সমাধানের রাস্তা এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি, চাইলেই রাশিয়া আলোচনার টেবিলে আসতে পারে।”

চলমান অস্থিরতার মধ্যে বিদ্রোহ চলা অঞ্চলগুলো থেকে দলে দলে রুশপন্থীরা ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন। গোলা নিক্ষেপ করেও বিদ্রোহীদের ঠেকাতে পারছে না ইউক্রেনের সরকারী বাহিনী, যা চলমান সংকটকে আরও ঘনিভূত করে তুলছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, “খুব বড় সংখ্যাক দল যে রাশিয়ার সঙ্গে যেতে চাচ্ছে বিষয়টি তা নয় এবং যারা যাবেন তারা যে খুব শিগগিরিই যাবেন তাও নয়।” তবে কয়েকটি বাসে করে স্থানীয়দের ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় পাড়ি জমানোর খবর এরইমধ্যে দিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বলছে, টেলিভিশনে প্রচারিত ওই খবরটি ২ দিন আগে রেকর্ড করা হয়েছিলো। ইউক্রেন থেকে আসা রুশপন্থীদের জন্য আশ্রয়ক্যাম্প ও প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা দিতে প্রেসিডেন্টের সরকারী বাসভবন ও দপ্তর ক্রেমলিন থেকে নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। ২০১৪ সাল থেকে ডোনবাস শহরে চলমান রুশপন্থীদের ইউক্রেনবিরোধী বিক্ষোভে সমর্থন দিয়ে চলেছে মস্কো। সেখানে রুশপন্থীদের উপর সরকারী বাহিনী হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রাশিয়ার। পুতিন বলেছেন, “ঘটনা ক্রমেই মারাত্বক আকার ধারণ করছে। ইউক্রেনের রাশিয়ান ভাষায় কথা বলাদের উপর ওই অমানবিক আক্রমণ করা হচ্ছে।”

সেখানে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর আগে ক্রিমিয়াকে এভাবেই সমর্থন দিয়েছিলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ দেশটি। যার ফলে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার রুশপন্থীরা যোগ দেয় রাশিয়ার সঙ্গে। সেই থেকে ক্রিমিয়া রাশিয়ার দখলে রয়েছে।     

পশ্চিমাদের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা আছে জানিয়ে পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার নিরাপত্তার ইস্যুটি বরাবরই উপেক্ষিত থাকায় আলোচনায় আগ্রহ হারাচ্ছে মস্কো। তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো তার সম্প্রসারণ বন্ধ রাখবে; এমন কোন কার্যকর প্রতিশ্রুতি দিলে আলোচনা হতে পারে। ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হোক এটাও চায়না দেশটির পুরনো মিত্র রাশিয়া।

আরও পড়তে পারেন-

এবার ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা চালাবে রাশিয়া

Link copied!