আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের পর সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা মনে করা হয় এরদোয়ানকে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে এরদোয়ান তুরস্কের সব নির্বাচনে চমক দেখিয়েছেন। কিন্তু এত বছর দেশ চালানোর পরও এরদোয়ানের মসনদ কেঁপে উঠলো এবারের নির্বাচনে।
পিপলস এলায়েন্সের হয়ে এরদোয়ান পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে ন্যাশন্স এলায়েন্সের কামাল পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ ভোট। তৃতীয় প্রার্থী আতা এলায়েন্সের সিনান ওগান পেয়েছেন ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোট।
দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হতে হলে যেকোনো প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কিন্তু এই মাইলফলক পেরোতে ব্যর্থ হয়েছেন দুই প্রার্থী এরদোয়ান ও কামাল।
কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন গড়ালো দ্বিতীয় দফায়। ২৮ মে রান অফে দেখা যাবে প্রেসিডেন্টের পদ পাওয়ার দৌড়ে রান আউট কে হলেন! আর কে পাচ্ছেন আগামী ৫ বছর তুরস্ক শাসনের ভার।
কিন্তু নির্বাচনের এই খেলার শুরু যার কারণে তার হাতেই এবার হবে খেলার শেষ। অন্তত নির্বাচনের মাঠ তা ই বলছে।
যার কারণে এই রান অফ সেই গেম চেঞ্জার হলেন নির্বাচনের তৃতীয় প্রার্থী এটিএ অ্যালায়েন্সের সিনান ওগান। মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনিই পাল্টে দিলেন পুরো নির্বাচনের চাল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন নির্বাচনে এবার কিং মেকার হচ্ছেন ৫৫ বছর বয়সী এই জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক। মাত্র ৫ শতাংশ ভোটের মালিক সিনান যাকে সমর্থন করবেন জয় মিলবে তারই।
যদিও দ্বিতীয় রাউন্ডে বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন এরদোয়ান তবুও সিনানকে পক্ষে রাখতে আগামী দুই সপ্তাহ রীতিমতো লড়াই চলবে এরদোয়ান ও কামালের।
আজারবাইজানি তুর্কি বংশোদ্ভূত শিক্ষাবিদ সিনান ওগান তাঁর ৫ শতাংশ পক্ষ নিয়ে যাকে সমর্থন দেন তিনিই বসবেন তুরস্কের প্রেসিডেন্টের আসনে।
তুরস্কের পূর্বাঞ্চলে আর্মেনিয়ার সীমান্তবর্তী ইগদির শহরে ১৯৬৭ সালে জন্ম নেওয়া সিনান মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন। তারপর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি নেন মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস থেকে।
ছোট দলের এই ছোট প্রার্থীর হাতেই নির্ভর করছে এরদোয়ান ও কামালের ভাগ্য। রান অফে এই দুজন লড়াই করলেও ভাগ্য নির্ধারণ করবেন কিন্তু সিনানই। এবার দেখার পালা সিনানের সমর্থনে আবারও এরদোয়ানের রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় না কি দুই দশক বাদে তুরস্ক পায় নতুন এক প্রেসিডেন্ট।