রাশিয়ার ‘গুপ্তচর তিমি’র জন্য আশ্রয় খোঁজা হচ্ছে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১২, ২০২১, ১০:৪৪ পিএম

রাশিয়ার ‘গুপ্তচর তিমি’র জন্য আশ্রয় খোঁজা হচ্ছে

রাশিয়ার গুপ্তচর তিমি ‘ভালদিমির’ জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল খোঁজা হচ্ছে । বছর দুয়েক আগে নরওয়ের উপকূলের কাছে দেখা পাওয়া সাদা রঙের এক তিমি নিয়ে দারুণ রহস্য তৈরি হয়। কারণ বেলুগা প্রজাতির ঐ তিমির গলায় ক্যামেরা এবং চিপ বসানো রুশ একটি বেল্ট পরানো ছিল। ধারণা জন্মে তিমিটি হয়তো সাগরে রাশিয়ার একটি গুপ্তচর।

কিন্তু কে, কোন উদ্দেশ্যে তিমিটির গলায় বেল্ট পরিয়ে দিয়েছিল সেই রহস্যের কোনো কূলকিনারা গত দু বছরেও হয়নি।

প্রাণী অধিকার কর্মীরা এখন অবশ্য তিমিটির ভালোমন্দ, নিরাপদ আশ্রয় নিয়েই উদ্বিগ্ন। আমেরিকান একজন চলচ্চিত্রকার এখন সাদা ঐ তিমিটির জন্য একটি অভয়াশ্রম তৈরি করতে তৎপর। নরওয়ে সরকারের সাহায্য চাইছেন তিনি।

তিমিটি প্রথম চোখে পড়ে ২০১৯ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে। নরওয়ের ইনগোইয়া এবং রোলভসিয়া দ্বীপের কাছে জেলে নৌকার পাশে হঠাৎ হঠাৎ সাদা রংয়ের কোন একটি প্রাণীর মাথা ভেসে উঠতে দেখা যায়।

দৃশ্যটি বিস্ময়ের সৃষ্টি করে কারণ সাদা রঙের বেলুগা তিমি দক্ষিণ আর্কটিক সাগরের এই অংশে দেখা যায়না। বিস্ময় আরো বাড়ে যখন দেখা যায় তিমিটির শরীরে শক্ত করে একটি বেল্টের মত বস্তু প্যাঁচানো। জেলেদের কাছে প্রথম মনে হয়েছিল তিমিটি যেন বিপদে পড়ে সাহায্য চাইছে।

জোয়ার হেস্টেন নামে এক জেলে ছবি তুলে সেটি অউডান রিকার্ডসেন নামে একজন সমুদ্র জীববিজ্ঞানীর কাছে পাঠান। ঐ বিজ্ঞানী তখন সাহায্যের জন্য নরওয়ের মৎস্য বিভাগের শরণাপন্ন হন। বিষয়টি তদন্তের জন্য ইয়োর্গেন রি উইগ নামে একজন বিশেষজ্ঞকে পাঠানো হয়। ‘আমি তিমিটিকে দেখলাম এবং আমার মনে হলো এটি সাধারণ কোনো তিমি নয়,’ বিবিসিকে বলেন মি. রি উইগ। ‘আমি জানতাম এটির সাথে অসামান্য কোনো কাহিনী জড়িয়ে আছে।’

একজন জেলে সাহস করে নিরাপদ পোশাক পরে বরফ-শীতল পানিতে নেমে তিমিটির শরীর থেকে বেল্টের মত জিনিসটি খুলে আনেন। তখন দেখা গেল যে ঐ বেল্টের সাথে একটি ক্যামেরা লাগানো এবং সেই সাথে রয়েছে একটি ইলেকট্রনিক চিপ। চিপের ওপর লেখা ‘সেন্ট পিটার্সবুর্গের তৈরি যন্ত্র‘।

সাথে সাথে নরওয়ের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত শুরু করে। তাদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে বলা হয়, ‘তিমিটিকে খুব সম্ভবত রাশিয়া তাদের গবেষণার কাজে লাগাচ্ছিল।’

রাশিয়া বহুদিন ধরেই সামরিক উদ্দেশ্যে ডলফিনের মত সাগরের স্তন্যপায়ী প্রাণী ব্যবহার করছে। বেশ আগে ব্যারেন্টস অবজারভার নামে নরওয়ের একটি ওয়েবসাইটে রাশিয়ার মারমানস্ক নামে একটি জায়গার কাছে তিনটি রুশ নৌ ঘাঁটির কাছে তিমি আটকে রাখার খাঁচার অস্তিত্বের প্রমাণ হাজির করা হয়েছিল।কেন এসব খাঁচা, এগুলোর ভেতর তিমি কেন – এ নিয়ে রুশ সামরিক বাহিনী কখনই মুখ খোলেনি।

 

Link copied!