যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। বামপন্থী পরিবারে জন্ম নেওয়া এক সময়ের লিবারেল ডেমোক্রেটির দলের সদস্য এখন কনজারভেটিভ পাটির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ও থেরেসা মে’র পর ফের নারী প্রধানমন্ত্রী পেলেন ব্রিটেনবাসী।
আরও পড়তে পারেন: রাজপ্রাসাদে নয়, স্কটল্যান্ডের প্রাসাদ দুর্গে শপথ নেবেন লিজ ট্রাস
বাংলাদেশি সময় বিকেল ৫টা ৩৯ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজ ট্রাসের নাম ঘোষণা করে ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কয়েক সপ্তাহব্যাপী প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরে সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকের বিরুদ্ধে জয় পান ট্রাস।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উত্তরসূরি নির্বাচনের ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা চূড়ান্ত পর্যায়ের ভোট দেন। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে ব্রিটিশদের ধারণা ছিল এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে ১৯ পয়েন্টের ব্যবধান থাকবে। তবে ওই ধারণা ভুল প্রমাণিত করে ঋষি সুনাকের চেয়ে অনেকে বেশি পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে যান বরিস জনসনের পছন্দের প্রার্থী লিজ ট্রাস।
আরও পড়তে পারেন: কে এই লিজ ট্রাস যিনি শিশুকালে মার্গারেট থ্যাচার সেজেছিলেন?
চূড়ান্ত নির্বাচনের আগে ট্রাস নিজের অবস্থানকে আগের চাইতে সুদৃঢ় করেন। ওইসময় কনজারভেটিভ পার্টির ৭৩০ জন সদস্যের মধ্যে ৬২ ভাগই বলেছেন তারা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ট্রাসকে ভোট দেবেন। মাত্র ৩৮ ভাগ সুনাককে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।
বর্তমান নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন। ট্রাস নিজের দলের মধ্যেও সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি। ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি সরব থাকা ট্রাস বরিস জনসনের অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবেও পরিচিত।
ট্রাসের রাজনৈতিক ইতিহাস বেশ বর্ণিল। বামপন্থী পরিবারে জন্ম নেওয়া লিজ যুক্তরাজ্যের যেসব অঞ্চলে কনজারভেটিভদের ভোট দেওয়ার রীতি নেই সেসব অঞ্চলে বেড়ে ওঠেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি লিবারেল ডেমোক্র্যাটের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করেন। ওইসময় দলটি ইংল্যান্ডের বড় বড় অঞ্চলগুলোর কনজারভেটিভ পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী দল ছিল।
গত সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান লিজ ট্রাস। ব্রিটেনের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার আগে লিজ ট্রাস ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে সাফল্যের সঙ্গে ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত দায়িত্ব সামলেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজেই কনজারভেটিভ দলের সদস্যদের লিজকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে আহবান জানিয়েছিলেন।
চলতি বছরের শুরুতে নানা কেলেঙ্কারির কারণে এবং একের পর এক মন্ত্রী পদত্যাগ করায় গত জুলাইয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১০ প্রার্থী। চূড়ান্তভাবে টিকে যান সুনাক ও ট্রাস। দলের সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে দুজনের মধ্যে একজনকে নির্বাচিত করা হয়।