কোটা আন্দোলনে ঢাকায় যত তাণ্ডব

বিজন কুমার

জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম

কোটা আন্দোলনে ঢাকায় যত তাণ্ডব

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতিরা। এতে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া এলাকার মেট্রোরেল স্টেশন, নগরীর বিভিন্ন এলাকার পুলিশ বক্সে আগুন, যাত্রাবাড়ী এলাকার হানিফ উড়াল সড়ক, উত্তরার হাউজ বিল্ডিং, রামপুরার বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন, মহাখালীর সেতু ভবন ও মোহাম্মদপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার তাণ্ডবলীলা ছিল বেশ আলোচনায়।

দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের এই প্রতিবেদনে থাকছে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে রাজধানী জুড়ে বিভিন্ন স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞের বিস্তারিত।

মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া এলাকার মেট্রোরেল স্টেশন ভাঙচুর

সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনে যখন উত্তাল পুড়ো রাজধানী। তখন গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা চালানো হয়। এসময় দুষ্কৃতিরা তাণ্ডবলীলা চালিয়ে রাতভর লুটপাট করে স্টেশনটি। একই দিন কাজীপাড়া স্টেশনেও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক স্টেশন দুটির মেরামতের সময়কাল সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে, দুটো স্টেশন ঠিক করতে প্রায় ১ বছর সময় লাগবে। এ ছাড়া হামলায় দুই স্টেশনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার অঙ্ক মেলাতে আরও সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

নগরীর বিভিন্ন এলাকার পুলিশ বক্সে আগুন ও পুলিশের ক্ষয়ক্ষতি

শুধু মেট্রোরেল স্টেশন নয়। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ বক্সেও অগ্নি সংযোগের খবরও আসে। এখন এসব পুলিশ বক্সের আশে পাশে গেলে এখনও নাকে ভেসে আসে পোড়াগন্ধ।

পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, আন্দোলন চলাকালীন দেশব্যাপী পুলিশের ২৩৫টি থানা, ফাঁড়ি ও ক্যাম্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশের ২৮১টি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কাজ করছে বলেও জানিয়েছে দপ্তরটি।

যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকার তাণ্ডবলীলা

কোটা আন্দোলনে ঢাকায় যেসব এলাকায় তাণ্ডবলীলা চলেছে তার মধ্যে আলোচনায় ছিল যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকা। এসব এলাকায় শুধু অগ্নি সংযোগই নয়। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন নিহতের ঘটনাও ঘটেছে।

গত ১৭-১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ী এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে ১৭ জুলাই এই এলাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়াল সড়কের কুতুবখালী ও ডেমরা অংশের টোল প্লাজায় আগুন দেয় দুষ্কৃতিরা। আগুনে পুড়ে টোল প্লাজার অটোমেটিক ডিজিটাল মেশিনসহ সব বুথই নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে হাতে হাতে টোল আদায় করছেন।

আরও পড়ুন: খাঁচায় বসে আদায় করা হচ্ছে টোল

মোহাম্মদপুর এলাকায়ও চলে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা। পুলিশ এ সময় হেলিকাপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করে।

পাশাপাশি উত্তরা হাউস বিল্ডিং থেকে রাজলক্ষ্মী পর্যন্ত ব্যপক উত্তাল হয়ে ওঠে ১৮ জুলাই। স্থানীয়দের দাবি, উত্তরা এলাকায় যারা আন্দোলন করেছে তারা সবাই শিক্ষার্থী।

রামপুরা এলাকার বিটিভি ও মহখালী এলাকার সেতু ভবন অগ্নিকাণ্ড

মেট্রোস্টেশনের হামলার পাশাপাশি বাড্ডা এলাকার বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ভবন ও মহাখালী এলাকার সেতু ভবনেও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। এরই মধ্যে বিটিভি ভবন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাড্ডা এলাকায় রাজধানীর অন্যান্য এলাকাগুলোর সঙ্গে সঙ্গে উত্তাল হয়ে উঠে। গত ১৮ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে বিটিভির ক্যান্টিন, রিসেপশন ও গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। একই দিন মহখালীর সেতু ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা হয়।

Link copied!