কোটা আন্দোলনে সহিংসতা: প্রতিটি হামলার বিচারের আশ্বাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ২৬, ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম

কোটা আন্দোলনে সহিংসতা: প্রতিটি হামলার বিচারের আশ্বাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোরনে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নাশকতার প্রতিটি ঘটনার বিচার হবে আশ্বাস দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বলেছেন, “আন্দোলনকারী প্রকৃত শিক্ষার্থীদের কোনো হয়রানি করা হবে না।”

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের দুর্জয় শপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই আশ্বাস দেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যারা গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত সহকারীকে (পিএস) ও ঢাকায় পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে তাদের লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে, চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবন থেকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ফেলে দিয়েছে, মানুষ ও রাষ্ট্রের সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে- তাদের কেউ আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৩-১৪ সালে নাশকতার পর অনেকের বিচার হয়েছে, কেউ কেউ আইনের ফাঁক গলে বের হয়ে গেছেন। এবার সেটি হবে না। সব হামলাকারীকে বিচারের আওতায় আনা হবে।”

রাষ্ট্রের ওপর হামলা বিএনপির তারেক রহমানের নির্দেশে হয়েছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “তারেক রহমানের ভয়েস সরকারের হাতে এসেছে। সে বলছে- বড় হামলা করলে বড় পদ, কারফিউ ভঙ্গ করো, না হলে পদ ছাড়ো। বিএনপির আরেক নেতা বলেছেন-তোমরা আন্দোলনে ঢুকে যাও, নৈরাজ্য সৃষ্টি কর। ছাত্রলীগের কর্মী মারলে ৫ হাজার, পুলিশ মারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের স্বীকারোক্তি তারাই দিয়েছে। এটি কোন রাজনৈতিক দল? এটি একটি দেশবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন।”

কোটা আন্দোলন চলাকালীন নাশকতার চিত্র তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু গত ৬০ বছরে বিটিভিতে কখনও হামলা ভাঙচুর হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিটিভির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু কখনও বিটিভিতে হামলা হয়নি।”

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দুর্যোগকালীন মানুষ যেখানে ছুটে যায়, সেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে ভাঙচুর চালায় তারা। ঢাকাবাসী ও দেশবাসীর গর্ব মেট্রোরেলের স্টেশন জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। বিদেশি রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারের আইডি হ্যাক করে ভুল বার্তা পোস্ট করা হয়েছে।”

হাছান বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যা চেয়েছিল, তার থেকে বেশিই পেয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা একটু ধৈর্য ধরত, তাহলে বিএনপি-জামায়াত এই সুযোগ পেতো না।”

মন্ত্রী বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সাধারণ কোনো শিক্ষার্থী মানুষ হত্যা বা জনগণ ও রাষ্ট্রের সম্পত্তির ওপর হামলা চালাতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিয়েছেন, কোনও শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হবে না। কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে তোমাদের কেউ যেন ব্যবহার না করতে পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।”

সাপ্তাহিক গণবাংলা ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সভায় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিমের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েলের পরিচালনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান, সংসদ সদস্য (এমপি) আওলাদ হোসেন, ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

Link copied!