উদ্বোধন হলো বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২০, ২০২৩, ০৭:৩৮ পিএম

উদ্বোধন হলো বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি

বাংলাদেশের দুটি সাবমেরিন বানৌজা ’নবযাত্রা’ ও বানৌজা ’জয়যাত্রা’র জন্য স্থায়ী ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

সোমবার (২০ মার্চ) সাড়ে ১২টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘাঁটির উদ্বোধন করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিতে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল অধিনায়ক মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের হাতে ঘাঁটির কমিশনিং ফরমান তুলে দেন। নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন। এর মধ্য দিয়ে ঘাঁটিটি নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করল।

১.২১ বিলিয়ন ডলারে তৈরি এই ঘাঁটিতে ৬টি সাবমেরিনসহ ৮টি যুদ্ধজাহাজ একইসাথে রাখা যাবে। বঙ্গোপসাগরের বুকে হওয়ায় যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে এই ঘাঁটি থেকে সাবমেরিন চলাচল করতে পারবে।

সাবমেরিনের অপারেশনাল কার্যক্রম, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপদ বার্থিংয়ের জন্য বিশেষায়িত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘাঁটি খুবই জরুরি ছিল। অবশেষে প্রায় ৭ বছর পর কক্সবাজার কুতুবদিয়া চ্যানেলে নিরাপদে জায়গা হলো সাবমেরিন দুটির। সেখানে সাবমেরিনের স্থায়ী ঘাঁটি নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এর আগে কর্ণফুলী নদীর ঈশা খাঁ নৌঘাঁটিতে রাখা হতো এই দুটি সাবমেরিন।

গত ২০১৭ সালের ১২ মার্চ চীন থেকে আনা বানৌজা ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামের সাবমেরিন দুটির কমিশনিং করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় সাবমেরিনের এই ঘাঁটি নির্মাণের ঘোষণা দেন সরকার প্রধান।

সাবমেরিন দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবো জাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ ঘাঁটিতে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে সংযুক্ত হলে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল তাঁকে স্বাগত জানান।

এ সময় সাবমেরিনারদের একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রিবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা নৌ কমান্ডোগণ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রায় ৭০০ একর জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’। কক্সবাজারের পেকুয়ার সাবমেরিন ঘাঁটি এলাকাটি বর্ণিল সাজে সেজেছে।

ঘাঁটির উল্লেখযোগ্য স্থাপনাসমূহের মধ্যে রয়েছে- সাবমেরিনের বার্থিং ফ্যাসিলিটিজ, সাবমেরিনের সহায়ক অন্যান্য যুদ্ধ জাহাজের বার্থিং ফ্যাসিলিটিজ, সাবমেরিন ফ্লিট হেডকোয়ার্টার্স, সাবমেরিন ট্রেনিং স্কুল ও সিমুলেশন সেন্টার, ড্রাই ডক এবং সাবমেরিন সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার বেজ সাপোর্ট ফ্যাসিলিটিজ রয়েছে। এছাড়াও কর্মকর্তা ও নাবিকদের বসবাসের জন্যও সব সুবিধা রাখা হয়েছে।

Link copied!