কলাবাগানের একটি বাসা থেকে ডা. সাবিরা রহমান নামে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ ধারণা করছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বাসায় সাবলেটে একাই থাকতেন বলে জানান কলাবাগান থানার এসআই গোলাম রাব্বানী।
নিহত নারী রেডিওলজিস্ট সাবিরা হোসেন
শরীরে তিনটি আঘাতের চিহ্ন
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক বলেন, সাবিরা হোসেনের শরীরে তিনটা স্টেপ রয়েছে। গলায় ও পিঠে এই স্টেপ থাকার পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের পরে বিস্তারিত জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, ড. সাবিরা গ্রিন হাসপাতের রেডিওলজিস্ট। কলাবাগানের ৫০/১ প্রথম লেনের এ বাসায় ভাড়া থাকেন। বাসায় দুজন নারী শিক্ষার্থীকে সাবলেট ভাড়া দিয়েছিলেন। একজন ঈদের পরে আসে নাই আরেক জন এখানে ছিলেন। যে মেয়েটা ছিল ওই মেয়েটার নাম তানিজ ফাতেমা।
ওই মেয়েটির ভাষ্যমতে সকাল আনুমানিক ১০ টার মর্নিং ওয়াক করে এসে দেখে ডক্টর সাহেবের রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙ্গার পরে দেখেন রুমটা ধোয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন এবং কলাবাগান থানা পুলিশ আসেন। পুলিশ এসে দেখতে পান উনার শরীরের তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকান্ড। সুপারভাইজার দারোয়ান এবং এই সাইটের মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসার নেওয়া হচ্ছে।
ঘটনার তদন্ত করবে ডিবি।
হত্যাকান্ড চাপা দিতে কি অগ্নিকান্ড?
ডা. সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আছি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকান্ড। এটাকে অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য তারা এখানে আগুন লাগিয়েছে।
আগুনে বিছানার আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন,আমি জানতাম না পরে এখানে এসে দেখি যে পাশের রুমে আরো দুইটা মেয়ে থাকতো। ওনার স্বামীও খবর পেয়ে এখানে এসেছেন। তারা স্বামী স্ত্রী আলাদা থাকলেও তাদের ভিতর যোগাযোগ ছিল। তাদের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
রুম থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হওয়য় সন্দেহ করে সাবলেটবাসী।
দুই সন্তানের জননী নিহত চিকিৎসক
সাবিরা রহমানের আর এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে বিবিএ পড়ছে ও মেয়ে স্কুলে পড়ে। স্বামী আবুল কালাম আজাদের সাথে মনমালিন্যের কারণে উনারা প্রায় এক বছর আলাদা থাকলেও যোগাযোগ ছিলো এবং ভালো সম্পর্ক ছিলো। চিকিৎসকের স্বামী শান্তিনগর থাকেন। ছেলে মেয়ে গ্রিন রোডে নানির বাসায় থাকে।
সন্দেহের তালিকায় নেই কেউ
মৃতে চিকিৎসকের স্বামী শামসুদ্দিন আজাদ বলেন, মায়ের কাছ থেকে খবর পেয়ে সকাল ১১ টার দিকে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে আমাকে ঢুকতে দেয় নি। পরে ভিতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে আমি এই হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার চাই।