ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের সুপারিশ করলেন জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ৩০, ২০২৩, ০২:৫৪ পিএম

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের সুপারিশ করলেন জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার

গুণগত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি (ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-ডিএসএ) স্থগিত রাখার সুপারিশ করেছেন ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার (বিশেষজ্ঞ) অলিভিয়ের ডি শ্যুটার। স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার চর্চা করার কারণে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং শিক্ষাবিদদের এই আইনের আওতায় আটক করা হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই সুপারিশ করেন এবং ডিএসএ নিয়ে নিজের অভিমত তুলে ধরেন।  চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে ১২ দিনের সফর শেষে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

অলিভিয়ের ডি শ্যুটার বলেন, “যারা মানবাধিকারের জন্য লড়াই করেন, তারা ভয়-আতঙ্কের মধ্যে থাকবেন—এটি কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। এসময়  যতক্ষণ পর্যন্ত এ আইনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আইনটি স্থগিত রাখতে সুপারিশ করেন জাতিসংঘের এই বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার।

ডিএসএ বিষয়ক মামলায়  এ পর্যন্ত  প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, “এ আইনে করা মামলায় অনেকে দীর্ঘ সময় আটকে ছিলেন। এসব বিষয় দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে এবং বাংলাদেশ যে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চাইছে, তাদেরও শঙ্কিত করবে।”

এসময় তিনি আরও বলেন, “আপনি জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বা সামাজিক সুরক্ষা দিতে পারবেন না।”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তিনি বা্ংলাদেশের সরকার সরকার, বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করেছেন উল্লেখ করে অলিভিয়ের ডি শ্যুটার বলেন, “আমার সহকর্মীরাও এ নিয়ে (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) কথা বলেছেন। তাই এই আইনের গুণগত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আমি তা স্থগিত রাখার সুপারিশ করছি।”

১২ দিনের সফরে জাতিসংঘের এই বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার  রংপুর, কুড়িগ্রাম ও কক্সবাজার সফরে যেয়ে শ্রমিক, কৃষক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সংবাদ সম্মেলনে অলিভিয়ের ডি শ্যুটার বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলেও পরিস্থিতি বেশ নড়বড়ে। এমন পরিস্থিতির পেছনে চরম আয়বৈষম্য ও মূল্যস্ফীতিকে বড় কারণ মনে করছেন তিনি। এ জন্য তিনি সামাজিক সুরক্ষা জোরদারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।

এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্য রয়ে গেছে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে আয়বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ।

Link copied!