পদ্মাসেতুর ধীরগতি: আটকে আছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ প্রকল্প

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ৮, ২০২১, ০১:৫১ এএম

পদ্মাসেতুর ধীরগতি: আটকে আছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ প্রকল্প

পদ্মাসেতুর কাজে ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না ‘আমিনবাজার-মাওয়া-মোংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালনলাইন নির্মাণ’ প্রকল্পের কাজ। ২ হাজার ৫০৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই বাড়াতে হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন,পরিরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

পদ্মা সেতুর কারনে কাজে ধীর গতি 

প্রতিবেদনে বলা হয় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন সাতটি রিভার ক্রসিং টাওয়ারের নির্মাণ কাজ অপেক্ষাকৃত ধীর গতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ‘আমিনবাজার-মাওয়া-মোংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালনলাইন’ প্রকল্পটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ হওয়ার কথা থাকলেও রিভার ক্রসিং টাওয়ারের কাজের অগ্রগতি তুলনামূলক কম। পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ নির্মাণাধীন টাওয়ারের ফাউন্ডেশনের কাজ সম্পূর্ণরুপে শেষ না হলে মোংলা থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালনলাইন পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হবে না। প্রকল্পভুক্ত ৪০০ কেভি সঞ্চালনলাইন পদ্মা নদী ক্রসিংয়ের জন্য নির্মাণাধীন টাওয়ার ফাউন্ডেশন হস্তান্তর না হওয়ায় প্রকল্পের অন্যান্য কার্যক্রম শেষের পথে থাকলেও সার্বিক কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তাই পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয়ের মাধ্যমে টাওয়ার ফাউন্ডেশন হস্তান্তরের সময়সূচি নিশ্চিত হয়ে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন অথবা ব্যয় বৃদ্ধি না করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। 

padma 2

কর্মপরিকল্পনার সমন্বয়ের অভাবে এমন হচ্ছে বলে উঠে আসে প্রতিবেদনটিতে।

দ্রুত কর্ম পরিকল্পনা গঠনের তাগিদ

প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি প্যাকেজের একটি রিভাইজড ওয়ার্ক প্ল্যান তৈরি করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তা নিবিড়ভাবে অনুসরণ করবে এবং প্রতিমাসে সেতু কর্তৃপক্ষ নির্মাণ কাজের একটি প্রগ্রেস রিপোর্ট প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। প্রকল্পের শুরুতেই ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল লোকবল পদায়ন করা হয়নি। এক্ষেত্রে যত দ্রুত তারাতরি সম্ভব লোকবল ও অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তা পাওয়া গেলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব হতো। 

প্রকল্পের বিস্তারিত কার্যক্রম

বিদ্যুৎ,জ্বাালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড আমিনবাজার-মাওয়া-মোংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালনলাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। মূল প্রকল্পটি ১ হাজার ৩৫৬ কোটি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের এপ্রিলে অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। পরবর্তীতে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন করে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২ হাজার ৫০৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং পিজিসিবির নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এটি বাস্তবায়নে সংশোধিত প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৩৫ দশমিক ৮২ শতাংশ সরকারি, ৫০ দশমিক ৭২ শতাংশ এডিবি এবং ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ পিজিসিবির নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে।

Link copied!