প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন বিএনপির নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ০৪:১০ পিএম

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন বিএনপির নেতারা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিকবার আপত্তিকর মন্তব্য করায় এবং ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক নায়িকার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ফোনালাপের ঘটনায় তথ্য ও সম্প্রচারপ্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যসহ বিএনপির নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোসহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

মুরাদ হাসানের পদত্যাগের বিষয়ে মির্জা আব্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, “সরকার সঠিক কাজটিই করেছে। আমি বলব বহুদিন পর সরকার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি ওনাকে আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে ধন্যবাদ জানাই।”

বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, “এটা শুধু আমাদের কথা না, এটা নিয়ে নারী নেত্রীরা সমালোচনা করছেন। যে শব্দ তিনি (মুরাদ) ব্যবহার করেছেন, যে অশ্রাব্য কথা তিনি বলেছেন, সেটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য না।”

মির্জা আব্বাস বলেন, “মুরাদকে পদত্যাগের জন্য নির্দেশ না দিয়ে তাকে বরখাস্ত করতে পারতেন প্রধানমন্ত্রী। তাহলে আরও খুশি হতাম।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনাবোধে ধরেছে, তা থেকে তিনি এটা করেছেন, এ জন্য আমরা খুশি। তাই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “যে অশ্রাব্য ভাষা এই প্রতিমন্ত্রী ব্যবহার করেছেন, সেটি কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনীতি আমিও করি, আমিও একজন নারী, প্রধানমন্ত্রীও একজন নারী। সমালোচনা করার একটা ভাষা আছে। কিন্তু তিনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, সেটি পুরো দেশের জন্য একটি কলঙ্কময়।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “ওনাকে (মুরাদ) আরও আগেই পদত্যাগ করিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। এখন সেটা হয়েছে, ঠিক আছে, কিন্তু শাস্তির কী হবে?”

এর আগে, মঙ্গলবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করায় বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি করে বিরোধী দল বিএনপি। এছাড়া, চিত্রনায়ক ইমন ও অভিনেত্রী মাহির সঙ্গে ফোনালাপে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ‘ধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। তার বক্তব্যজুড়ে ছিল অশ্রাব্য অশালীন শব্দ।

জাইমাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এবং ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় চরম বিতর্কের মুখে পড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। কোনো কোনো বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহিত হওয়ার পর তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।

বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা ডা. মুরাদের জন্য নতুন নয়। কিছুদিন আগে বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরার দাবি জানিয়ে নিজ দলের মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম ও রাষ্ট্রধর্ম থাকতে পারে না— এমন মন্তব্যও তিনি আরেক অনুষ্ঠানে করেন।

Link copied!