বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে যেসব তথ্য উঠে এসেছে তা আমাদের জন্য লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজ বাংলাদেশ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেটা পড়লেই লজ্জিত হই। তাদের রিপোর্টে এসেছে–বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের লেশমাত্র নেই। ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এ রিপোর্টে।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের দিকে তাকায় না–আওয়ামী লীগ নেতাদের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তারা নিজেদের দিকে তাকায়, এ জন্যই বিশ্বজুড়ে এ রিপোর্ট তৈরি করেছে। তারা গণতন্ত্রকে তাদের রাষ্ট্রে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এ জন্য তারা সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের নেতা হিসেবে কাজ করছে।”
আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “সে লক্ষ্যে তারা গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে। মানুষের ন্যূনতম অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় গত সোমবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ওই মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, সরকারের উদ্যোগে নির্যাতন-নিষ্ঠুরতা, রাজনৈতিক কারণে বন্দি, ইন্টারনেটে ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা সৃষ্টিসহ বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির ব্যাপক দায়মুক্তির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় আইন বিশেষজ্ঞরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ডিত হওয়ার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত প্রমাণের ঘাটতি থাকার কথা বলেছেন। এসব আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই বিচার ও সাজা ছিল নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক ছক বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।