রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ভাগ করে নেওয়া হোক: বাংলাদেশ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ১১, ২০২১, ০৭:৩৭ পিএম

রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ভাগ করে নেওয়া হোক: বাংলাদেশ

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া জোরদার করাসহ রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ও দায়িত্ব ভাগ করে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তাসহ জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহায়তার সমন্বয় জোরদার করা’ শীর্ষক সাধারণ বিতর্কে অংশ নিয়ে  জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এ আহবান জানান।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য যে মানবিক সহায়তা দিচ্ছে তা তু্লে ধরে মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি মনোযোগ বাড়ানোর অনুরোধ জানান রাবাব ফাতিমা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তিনি বলেন, “ আপনারা মিয়ানমারের ওপর আর মনোযোগ বাড়ান যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের নিজভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়।”

জাতিসংঘে বাংলাদেশের এই স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের ফলে এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে যে জটিল রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা আরও জটিলতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।”

সাধারণ বিতর্কে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মানবিক পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, প্রতিরোধ, অভিযোজন, প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন, এাণ ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে উত্তম অনুশীলন এবং বিশেষ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

রাবাব ফাতিমা বলেন, “আমরা ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছি যা আমাদের জলবায়ু নাজুক পরিস্থিতি থেকে জলবায়ুর প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন ও সমৃদ্ধিপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত করতে সাহায্য করছে।”

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা বিষয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুতদের মানবিক চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ ও অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানো খুবই প্রয়োজন।” এক্ষেত্রে তিনি প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাসটার ডিসপ্লেসমেন্টের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে রাবাব ফাতিমা আরও বলেন, “উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মানবিক সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস ও প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সক্ষম সমাজ বিনির্মাণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”

জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন সূত্র জানায়, বিতর্কের পর সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহযোগিতার সমন্বয় শক্তিশালীকরণ বিষয়ক চারটি রেজুলেশন গৃহীত হয়। বাংলাদেশ এর মধ্যে ‘গ্রুপ-৭৭ ও চীন’ এর পক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ক রেজুলেশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করে।

Link copied!