সব বিভাগে মাঝারি তাপপ্রবাহ, বাড়ছে হিটস্ট্রোকের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ১৩, ২০২৩, ১০:১২ পিএম

সব বিভাগে মাঝারি তাপপ্রবাহ, বাড়ছে হিটস্ট্রোকের শঙ্কা

সারাদেশে চলছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ। আর এই তাপপ্রবাহ বেশ কয়েক দিন ধরে চলমান থাকতে পারে। পহেলা বৈশাখের পরের দিন থেকে টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত মেহেরপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ হতে পারে।

এসব জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রিতে উঠতে পারে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রকাশিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানা গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কোনো এলাকার পাশাপাশি দুটি স্টেশনে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি থাকলে ওই এলাকায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে তীব্র তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিন ও রাতে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে পাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে রবিবার পর্যন্ত এই গরম অব্যাহত থাকতে পারে। সে পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। এরপর কিছু কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার সকালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপাত্রা ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল তেঁতুলিয়ায়। আজ রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, দেশজুড়ে চলা তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের শঙ্কা বেড়ে ড়েছে। শিশু, বৃদ্ধ ও যারা দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিরা এই গরমে বেশি রয়েছেন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে। অবজ্ঞা করলে হতে পারে মৃত্যুও। তাই বাড়তি তাপমাত্রায় সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

হিট স্ট্রোকের রোগী হঠাৎ করেই অজ্ঞান হতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, হালকা মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, মাথা হালকা অনুভব করা। এছাড়া হতে পারে খিঁচুনি, ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস, বমিভাব কিংবা বমি হওয়া, রোগী অসংলগ্ন আচরণ করা।

মেডিসিন ও নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হিট স্ট্রোকের রোগীর যেকোনো স্বাভাবিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কমে যাবে। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড গরমে হার্ট রেট কমে গিয়ে ব্রেনে রক্ত সঞ্চালন কমে গিয়ে রোগী অজ্ঞান হতে পারে।’

চিকিৎসকরা বলছেন, হিটস্ট্রোক এড়াতে যতদূর সম্ভব ঘরের বাইরে বের না হওয়াই ভাল। এমন উপসর্গ দেখা দিলে পর্যাপ্ত বাতাস আছে এমন ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে যেতে হবে। গোসল করা আদৌ সম্ভব না হলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গা মুছে নিতে হবে। পড়তে হবে ঢিলেঢালা পোশাক। ধীরে ধীরে পান করতে হবে মৃদু ঠাণ্ডা পনি। তবে খিঁচুনি দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করার পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

Link copied!