‘ট্রেনে কারও সুপারিশ ব্যবহার করে সুবিধা নেওয়া যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ৮, ২০২২, ১০:৫১ পিএম

‘ট্রেনে কারও সুপারিশ ব্যবহার করে সুবিধা নেওয়া যাবে না’

ট্রেনে কারও সুপারিশ ব্যবহার করে কোনো ধরনের অবৈধ সুযােগ-সুবিধা দাবি করা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

রবিবার বিকেলে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্ম-সচিব) মােহাম্মদ আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের অগােচরে তাদের রেফারেন্সে আত্মীয়, পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব পরিচয় উল্লেখ করে বিভিন্ন রেলস্টেশনে টিকিট দাবিসহ ট্রেনে উঠে বিশেষ সুবিধা দাবি করছেন। এছাড়া অনেকেই মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের নিকট আত্মীয় পরিচয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকদের কাছে বিভিন্ন প্রকার অবৈধ সুযােগ-সুবিধার জন্য মােবাইলে যােগযােগ করছেন। বিষয়টি মন্ত্রীকে অবহিত করা হলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করার পাশাপাশি মােবাইল নাম্বারগুলাে আইন প্রয়ােগকারী সংস্থার নিকট প্রেরণ করে তাদের সঠিক পরিচয় জানার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

“এছাড়া এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভ্রান্তি না হওয়ার জন্য এবং দাপ্তরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরােধ করা হলাে।”

এর আগে, ঢাকাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে তিন যাত্রী বিনা টিকিটে এসি কেবিনে চেপে বসেন। ট্রেনে কর্তব্যরত টিটিই শফিকুল ইসলাম তাঁদের টিকিট দেখতে চাইলে তাঁরা রেলপথমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। টিটিই বিষয়টি পাকশী বিভাগীয় রেলের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (এসিও) মো. নুরুল আলমের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি সর্বনিম্ন ভাড়া নিয়ে টিকিট কাটার পরামর্শ দেন।

এসিওর পরামর্শ অনুযায়ী টিটিই শফিকুল ইসলাম ওই তিন যাত্রীকে এসি টিকিটের পরিবর্তে মোট ১ হাজার ৫০ টাকা নিয়ে জরিমানাসহ সুলভ শ্রেণির নন-এসি কোচে সাধারণ আসনের টিকিট করে দেন। এ সময় ট্রেনে কর্তব্যরত অ্যাটেনডেন্টসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ওই ৩ যাত্রী তাঁদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে টিটিই শফিকুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতেই সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ। সাময়িক বরখাস্তাদেশ শুক্রবার (৬ মে) থেকে কার্যকর হয়েছে।

এরপর, রেলমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, ট্রেনের যাত্রীদের সাথে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁদের তিনি চেনেনও না। সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণেই বরখাস্ত হয়েছেন টিটিই।

তবে পরে জানা গেছে, তিন যাত্রীই রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর আত্মীয়। মন্ত্রীর পরিচয় ব্যবহার করেই তাঁরা বৃহস্পতিবার রাতে ঈশ্বরদী থেকে আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে উঠেছিলেন।

Link copied!