সাধারণত কোনও খেলার ক্ষেত্রে টসের ব্যাপারটি খুবই প্রচলিত। কিন্তু কখনও শুনেছেন, বিয়ের জন্য টস করতে হচ্ছে, তাও আবার কাকে বিয়ে করবেন তা স্থির করতে? হ্যাঁ, এমনই একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে ভারতের কর্নাটকের একটি গ্রামে।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ভারতের কর্নাটকের হাসান জেলার সাকলেশপুর গ্রাম। বছরখানেক আগে সাকলেশপুরের এক যুবকের সঙ্গে পাশের গ্রামের এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সমস্যাটা তৈরি হয় ঠিক ছ’মাস আগে থেকেই। প্রেমিক-প্রেমিকার জীবনে তৃতীয় ব্যক্তির আবির্ভাব হয়। ওই যুবক তাঁর প্রেমিকাকে লুকিয়েই মাস ছয়েক আগে অন্য একটি গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে আলাপ করেন। তার পর তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনকেই আলাদা আলাদা সময় দিতেন এবং দু’জনের অজান্তেই এ কাজ করতেন ওই যুবক।
কিন্তু সত্যিটা কত দিন আর চাপা থাকে! যুবককে দ্বিতীয় প্রেমিকার সঙ্গে দেখে ফেলেন তার প্রথম প্রেমিকার এক আত্মীয়। সেই কথা চার দিকে চাউর হয়ে যায়। মহাবিপদে পড়েন যুবক। তাঁর আগের প্রেমিকাও নাছোড়বান্দা। যুবক তাঁর পরিবারকে জানিয়ে দেন, তিনি দ্বিতীয় জনকেই ভালবাসেন এবং তাঁকেই বিয়ে করবেন। এই ঘোষণা মাত্রই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অন্য দিকে, দ্বিতীয় তরুণীর বাবা-মা ওই যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেন। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। দুই তরুণীই ওই যুবককে বিয়ে করার জন্য জেদ ধরে বসেন। ফলে আরও সমস্যা বাড়ে।
শেষমেশ বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন দুই পরিবার। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধানও স্থির করতে পারছিলেন না কী রায় দেওয়া যায়। অনেক ভেবে শেষে একটা উপায় বার করা হয়। পঞ্চায়েত জানায়, টস করে এর সমাধান করা হবে। টসে যিনি জিতবেন তিনিই ওই যুবককে বিয়ে করবেন।
তবে টসে কে জিতেছেন, তা নিয়ে গ্রামবাসীদের দু’রকম বক্তব্য সামনে এসেছে। কেউ বলছেন প্রথম তরুণী টসে জিতেছেন। কেউ বলছেন দ্বিতীয়। তবে যিনিই জিতুক না কেন, ওই যুবক শেষে স্থির করেন তিনি প্রথম প্রেমিকাকেই জীবনসঙ্গিনী হিসাবে বেছে নেবেন। হলও তাই।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে হিন্দিতে একটা সিমেনা হয়েছিল ‘এক ফুল দো মালি’। সঞ্জয় খান এবং সাধনা শিবদাসানি অভিনীত সেই ছবি বেশ হিটও হয়েছিল। সেই ছবির নামই পরবর্তীকালে ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে ত্রিকোণ প্রেমের ক্ষেত্রে ব্যবহার হতে শুরু করে। যা আজও মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। কর্নাটকের ঘটনা অনেকটা সে রকমই। তবে বাস্তবের এই কাহিনির শিরোনাম একটু বদলে ‘দো ফুল এক মালি’ই হওয়া উচিত। কারণ এই গল্পের ‘নায়িকা’ দু’জন। আর সেই দু’জনকে নিয়েই মহা সমস্যায় পড়েছেন ‘নায়ক’।
সূত্র: আনন্দবাজার।