দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

আওয়ামী লীগের ইশতেহার: নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩, ০২:৫৬ পিএম

আওয়ামী লীগের ইশতেহার: নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি

প্রতিকী ছবি

নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা, প্রশিক্ষণসহ কর্মসংস্থান সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। সামনে এসব কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করা হবে বলেও জানায় দলটি।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসার করা হবে। জেলা ও উপজেলায় ৩১ লক্ষ যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

ইশতেহারে বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বেকার যুবকদের সর্বশেষ হার ১০.৬ শতাংশ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৩.০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।

নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিত তরুণ ও যুবসমাজের জন্য যথোপযুক্ত কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে ইশতেহারে বলা হয়, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগীদের সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হবে।

ইশতেহারে বলা হয়, অনলাইন শ্রমের বাজারে বিভিন্ন পেশাদারি সেবাসমূহ যুক্ত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে হিসাবরক্ষণ, পর্যালোচনা ও ব্যাখ্যা, পে-রোল, আইটি সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণের কাজসহ আরও নতুন নতুন ক্ষেত্র সংযুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

যুবদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি ধীরে ধীরে দেশের সকল উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানানো হয় ইশতেহারে। আরো জানানো হয়, তৃণমূল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় ‍‍`যুব প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান কেন্দ্র‍‍` স্থাপন করা হবে।

শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা ১৭.৮ শতাংশ যুবকদের অনুপাত আগামী ৫ বছরে ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে। আগামী ৫ বছরে ২ লক্ষ জন যুবকদের মাঝে ৭৫০ কোটি টাকা যুব ঋণ বিতরণ করা এবং ২ লাখ ৫০ হাজার জন যুবককে আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়।

ইশতেহারে আরও জানানো হয়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে দেশে-বিদেশে বিকাশমান কর্মসংস্থানের সুযোগগুলো কাজে লাগানোর জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে পলিটেকনিক ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটগুলো ঢেলে সাজানো হবে। যুবসমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য প্রতিটি উপজেলায় পাঠাগার স্থাপন, গণতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিক ও শরীরচর্চা কেন্দ্র এবং ‍‍`স্মার্ট ইয়ুথ হাব‍‍` গড়ে তোলা হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ঘূর্ণায়মান ঋণ তহবিল, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ শর্তে এবং স্বল্প সুদে ঋণ দেবার জন্য বিশেষ সেল গঠন করে উদ্যোক্তাদের সহায়তা করা হবে।

অসহায়, অসমর্থ এবং শারীরিকভাবে অক্ষম যুবদের শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে এবং মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নিরসন এবং মাদকাসক্তদের ও মাদক ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি জানায় আওয়ামী লীগ।

অবকাঠামোর উন্নয়ন ও পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটকে ‍‍`শ্রেষ্ঠত্বের কেন্দ্রস্থল - Centre of Excellence‍‍` হিসেবে গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।

এছাড়াও কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তার জন্য আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে জানানো হয়, আইএলও কনভেনশন এবং আইনে প্রদত্ত শ্রমিক অধিকার ও কল্যাণমূলক শর্তাবলি পালন অব্যাহত থাকবে।

এতে বলা হয়, নারীরশ্রমে অংশগ্রহণের বাধা দূর করা এবং নারী শ্রমিক সংগঠন সুসংহত করা হবে।

এতে আরও বলা হয়, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও পরিচালনার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, বিধিসম্মত শ্রমঘণ্টা নির্ধারণ, নিয়োগের নিরাপত্তা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, চিত্তবিনোদন এবং শ্রম আইনে নির্ধারিত শ্রমিক কল্যাণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদান অব্যাহত রাখা হবে।

ইশতেহারে বলা হয়, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা, প্রশিক্ষণসহ কর্মসংস্থান সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ডাটাবেজের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যতের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুসারে কর্মপ্রত্যাশী ও কর্মসংস্থানকারীর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হবে এবং কর্মসংস্থানের বিষয়ে সহায়তা প্রদান করা হবে।

Link copied!