ইশতেহার ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও পরিবেশ রক্ষায় একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩, ০১:৪২ পিএম

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও পরিবেশ রক্ষায় একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগের

প্রতিকী ছবি

দেশের জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় নানা প্রতিশ্রুতির কথা ইশতেহারে তুলে ধরেছে আওয়ামী লীগ। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে জানানো হয়, ডেল্টা প্ল্যান তথা ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ মূলত একটি অভিযোজনভিত্তিক কারিগরি ও অর্থনৈতিক মহাপরিকল্পনা, যার উন্নয়নের ফলাফলের ওপর পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, ভূমি ব্যবহার, প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং এদের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে বিবেচনা করে করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়,  ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে এ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার রূপকল্প হচ্ছে নিরাপদ, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাত সহিষ্ণু সমৃদ্ধিশালী ব-দ্বীপ গড়ে তোলা। মহাপরিকল্পনার মিশন হচ্ছে দৃঢ়, সমন্বিত ও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনশীল কার্যকরী কৌশল অবলম্বন, এবং পানি ব্যবস্থাপনা ন্যায়সঙ্গত করা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত এবং অন্যান্য ব-দ্বীপসংক্রান্ত- সমস্যা মোকাবিলা করে দীর্ঘমেয়াদি পানি ও খাদ্যনিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।

ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয়, জাতীয় উন্নয়নের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে: ১. ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ; ২. ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশেরমর্যাদা অর্জন এবং ৩. ২০৪০ সাল নাগাদ একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর কাক্সিক্ষত লক্ষ্য হচ্ছে ৬টি।

এগুলো হলো: ১. বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ২. পানি ব্যবহারে অধিকতর দক্ষতা ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা; ৩. সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; ৪. জলবায়ু ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ এবং সেগুলোর যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা; ৫. অন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও সুশাসন গড়ে তোলা এবং ৬. ভূমি ও পানিসম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা।

জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নেওয়া উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য পৃথিবীতে প্রথম বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয় মুজিববর্ষে। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণীঝড়ে উদ্বাস্তু পরিবার পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে।

ইশতেহারে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, অভিযোজন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ডেল্টা হটস্পটভিত্তিক প্রকল্প/কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা, দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা এবং পানিসম্পদ রক্ষায় ইতোমধ্যে সরকার যে সকল নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তার বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে।

ইশতেহারে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য নিম্নলিখিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে: (ক) উৎপাদনশীল/সামাজিক বনায়ন ২০ শতাংশে উন্নীত; (খ) ঢাকা ও অন্যান্য বড় নগরে বায়ুর মান উন্নয়ন; (গ) শিল্পবর্জ্যরে শূন্য নির্গমন/নিক্ষেপণ প্রবর্ধন; (ঘ) আইনসংগতভাবে বিভিন্ন নগরে জলাভ‚মি সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষা; (ঙ) সমুদ্র উপক‚লে ৫০০ মিটার বিস্তৃত স্থায়ী সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা।

এতে আরও বলা হয়, পরিবেশের উপর প্লাস্টিক পণ্যের বিরূপ প্রভাব নিয়ন্ত্রণেপ্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ও পচনশীল প্লাস্টিকের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।

এতে বলা হয়, দেশের মোট জ্বালানিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ ২০৪১ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ অর্জনে জোরালো প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।

এতে আরও বলা হয়, ভূ-উপরিস্থ পানির যুক্তিসংগত ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

এতে বলা হয়,সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বন সংরক্ষণে অগ্রাধিকারসহ দেশের বনসম্পদ রক্ষা, বন সৃজন, বন্যপ্রাণী, অতিথি পাখিসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।

ইশতেহারে বলা হয়, সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ও লবণাক্ততা রোধ এবং সুন্দরবন ও অন্যান্য অববাহিকা অঞ্চলে মিঠাপানির অভাব দূর করার ব্যবস্থা বাড়ানো হবে।

এতে বলা হয়, দেশের বিস্তীর্ণ হাওর ও ভাটি অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

এতে আরও বলা হয়,নেপাল ও ভারতের সঙ্গে সপ্তকোষী প্রকল্পে বাংলাদেশের ন্যায্য অংশীদারত্ব অর্জনের চেষ্টা করা হবে।

Link copied!