ফিরে আসার ঘুঁটি সাজাচ্ছেন শেখ হাসিনা? –নিউজ এইটিন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ৩১, ২০২৫, ০১:৫৬ পিএম

ফিরে আসার ঘুঁটি সাজাচ্ছেন শেখ হাসিনা? –নিউজ এইটিন

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশকে ইউএসএআইডি প্রকল্পে সমস্ত রকমের আর্থিক অনুদান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই এই নির্দেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিঃসন্দেহে বিরাট বড় ধাক্কা৷

এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘ফিরে আসার ঘুঁটি সাজাচ্ছেন হাসিনা? ট্রাম্পের কোপের পরই বাংলাদেশ জুড়ে চর্চা’ শিরোনামে।

প্রতিবেদনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের বরাতে দাবি করা হয়, আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত আসলে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের পথ প্রশস্ত করল।

শুধু তাই নয়, মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে হাসিনা যে যে অভিযোগ করেছিলেন, আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত সেই অভিযোগেই সিলমোহর দিল বলে মনে করা হচ্ছে৷

যদিও ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধ হচ্ছে এমন খবর বের হলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য ইউএসএইডের খাদ্য সহযোগিতা বন্ধ হচ্ছে না।

রবিবার, ২৬ জানুয়ারি বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর এ কথা জানান।

অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ৯০ দিনের জন্য সারাবিশ্বে ইউএসএআইডির সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ইউএসএআইডি।’

‘অর্থাৎ, রোহিঙ্গাদের জন্য ইউএসএইডের খাদ্য সহযোগিতা বন্ধ হচ্ছে না। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন,’ বলেন তিনি।

এদিকে নিউজ ১৮’র প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যের বরাতে বলা হয়, আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মুখোশ খুলে দিয়েছে৷ তিনি আরও জানান, এখনও শেখ হাসিনাই তাদের নেত্রী এবং পথপ্রদর্শক৷ তারা দেশ ছেড়েও যাবেন না এবং হাসিনার প্রত্যাবর্তনের জন্য অপেক্ষা করবেন৷ নির্বাচন ঘোষণা হলে তাঁরা পাল্টা লড়াই দিতে তৈরি বলেও দাবি করেছেন আওয়ামি লিগের ওই সাংসদ৷ পাশাপাশি, তার দাবি, ‘দেশের মানুষ জানেন বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনা কী করেছেন৷ দেশবাসী এখনও শেখ হাসিনাকে ভালবাসেন।’

সূত্রের খবর, দেশে না থাকলেও প্রত্যাবর্তনের জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছেন হাসিনা৷ এমন কি, প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেও নিজের দল আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণের রাশ নিজের হাতেই রেখেছেন হাসিনা৷ দেশে পালাবদলের পর আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতাই ভারত সহ বিদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন৷ দিল্লি, কলকাতা, বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে থাকা তার দলের বিশ্বস্ত নেতাদের সঙ্গে হাসিনার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও খবর৷

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন অনুদান বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে অর্থনৈতিক ভাবে জোরাল ধাক্কা খাওয়ার পাশাপাশি গোটা বিশ্বেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফের একবার ধাক্কা খেয়েছে৷ রাজনৈতিক ভাবে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত হাসিনার হাতে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রচারের নতুন অস্ত্র তুলে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে৷ প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশ জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, হিংসা, শ্রম অধিকার খর্ব, গণতান্ত্রিক সরকারকে জোর করে ক্ষমতাচ্যুত করার মতো ঘটনার জেরেই আমেরিকা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

বাংলাদেশের যে সংগঠনগুলি আমেরিকার এই অনুদান থেকে লাভবান হত, সেই সংগঠনগুলি বরাবরই অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হয়ে জোরাল সওয়াল এবং প্রচার করেছে বাংলাদেশে৷ আওয়ামী লীগের ওই সাংসদের কথায়, ‘ধীরে ধীরে গোটা বিশ্ব থেকে সমর্থন আদায়ে আমরা এই ধরনের পরিস্থিতিগুলিকেই কাজে লাগিয়ে নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করব।’

Link copied!