সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র আরও দুই সমন্বয়ককে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তারা হলেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।
শনিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় সারজিস ও হাসনাতকে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জুনায়েদ আলম সরকার। রাত পৌনে নয়টার দিকে তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় সারজিস ও হাসনাতকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই দুজনকেও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিতে ও সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে তথ্য জানতে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে তুলে নিয়ে যান সাদাপোশাকে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল সদস্য। পরে রাতে ডিবির পক্ষ থেকে তাদের হেফাজতে নেওয়ার কথা জানানো হয়। নাহিদ, আসিফ ও বাকের এখনও ডিবির হেফাজতে আছেন।
ডিবি হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই পাঁচ সমন্বয়কই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে সারজিস আলম প্রাণিবিদ্যা বিভাগের, হাসনাত আবদুল্লাহ ইংরেজি বিভাগের (২০১৬-১৭), নাহিদ ইসলাম সমাজবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৬-১৭), আসিফ মাহমুদ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৭-১৮), আবু বাকের ভূতত্ত্ব বিভাগের (২০১৯-২০)।
বিকেল চারটার দিকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কে’র ১২ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দল ডিবি কার্যালয়ে যান। প্রধান ফটকের অভ্যর্থনা কক্ষে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের বলেন- ডিবিপ্রধান হারুনের সঙ্গে দেখা করার জন্য ‘অনুমতি লাগবে’। তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন পুলিশ সদস্যরা। ২০ মিনিট ধরে শিক্ষকরা অপেক্ষা করেন।
একপর্যায়ে তাদের জানানো হয়, ডিবিপ্রধান হারুন তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। তার একটি বৈঠক আছে।
শিক্ষকরা তখন ১০ মিনিটের জন্য হলেও ডিবিপ্রধানের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করতে থাকেন। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে জানান, ডিবিপ্রধান হারুন এখনই বের হয়ে যাবেন। ‘ব্যস্ততার কারণে’ কথা বলতে পারবেন না। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পরামর্শ দেন, বের হওয়ার সময় হারুনের গাড়ি থামিয়ে কথা বলতে। কিন্তু শিক্ষকেরা এতে অস্বীকৃতি জানান।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ডিবির অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ডিবির ফটকে কথা বলেন শিক্ষকরা। এ সময় তারা প্রশ্ন তোলেন, নিরাপত্তার শঙ্কা থাকলে পরিবারের কাছে ওই ৩ সমন্বয়ককে হস্তান্তর করা হচ্ছে না কেন?