চিত্রনায়িকা পরীমণির সাথে রাজের চলমান বির্তক নিয়ে কথা বলায় নির্মাতা দীপংকর দীপনের ওপরে চটেছেন পরীমণি। মূলত ‘অন্তর্জাল’ সিনেমার নির্মাতা সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাস দেন। এর জেরেই তাকে নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (৫ জুন) এই নির্মাতার স্ট্যাটাস শেয়ার করে পরী লিখেছেন, ১০ দিন যে জামাই বাসা ছেড়ে গেছে এটা তো আপনার সিনেমার নায়িকার কারণেই জানাজানি হলো ভাইয়া! সিনেমা ফ্যাক্ট আবার কারও ঘাড়ে চেপে লাইম-লাইটে আসাটাও ফ্যাক্ট!
যেটা আপনার সিনেমার এই মেয়েটা করল। সবখানে লাফাতে লাফাতে গিয়ে ইন্টারভিউ দিচ্ছে। এতো ডাক তো তার কোনো কালে আর আসে নাই। এখন বইলেন খালি আমার থুতু না চাইটা যেন সিনেমার কথাটাও ঠিকমতো বলে।
আপনার কিন্তু আরও বড় শিল্পীরা আছেন এই সিনেমায়, তাদের এখনও ওনার মতো প্রমোশনে যেতে দেখিনি। নাকি সব দায়িত্ব এবার এই একজনেরই? আপনার সঙ্গে তো আমার পার্সোনালি অনেক ভালো সম্পর্ক! এতো বড় স্ট্যাটাস লিখতে পারলেন, অথচ আমাকে একটা কল করে কিছু বলতে পারলেন না! আফসোস! আর এমন তুচ্ছ করে লিখবেন না আর প্লিজ ভাইয়া। জীবন সিনেমার কাছে তুচ্ছ করে দেওয়া কোনো মেকারের সঙ্গে যায় না। জীবন দামী- সব থেকে দামী।
এর আগে দীপংকর দীপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ভাই ও বোন প্লিজ থামেন। দয়া করে আমাদের ক্ষমা করে দেন। একবার না, বারবার এসব হচ্ছে। নিজেদের টাকা ও ব্যক্তিগত জীবন নষ্ট করে, দিন-রাত অপরিসীম কষ্ট করে একটা একটা কনটেন্ট বানিয়ে নিয়ে আসি, দর্শকের সামনে উপস্থাপন করি, তখনই আপনাদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা কাহিনি সামনে চলে আসে। সিনেমার কনটেন্টের থেকে দর্শকদের আগ্রহ চলে যায় আপনাদের প্রেম, বিয়ে, বিচ্ছেদ, সন্তান এসব দিকে— যা সামনে আসারই কথা না। একবার না বারবার হচ্ছে এসব। সত্যি আমি টায়ার্ড, আপসেট। প্রত্যেকের জীবনেই এসব আছে, কিন্তু এসব আমরা সামনে নিয়ে আসি না। এসব নিয়ে কথা বলি না পাবলিকলি। আপনারা তো পাশের মানুষটাকেও কিছু বলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে। নিজেদের পাবলিক করলে পাবলিক তো মজা নেবেই। আপনারা শুরুটা করেন, বাকিরা আপনাদের খোঁচাতে থাকে।
সাংবাদিক ভাই-বোন, পত্রিকার মালিকপক্ষ, আপনাদের অনুরোধ করি, প্লিজ ইগনোর করেন এসব। এসব ছাড়া আপনাদের পত্রিকা চলবে না, আমি বিশ্বাস করি না। অনেক শক্ত আপনাদের ভিত্তি। শস্তা ইউটিউবার আর ল্যাপটপ বেসড অনলাইন পত্রিকা করুক, আপনারা কেন? আপনারা স্টাবলিশ সাংবাদিকরা একবার ইগনোর করে দেখুন, সব থেমে যাবে।
তিনি আরও লেখেন, দর্শকদের অনুরোধ করি, যখন দেশের বাইরে কেউ আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে, আপনাদের দেশের সিনেমার স্ট্যান্ডার্ড কেমন? তখন সামনে আসবে কিন্তু তারকাদের বিয়ে, প্রেম, বিচ্ছেদের গল্প দিয়ে নিজের দেশের ব্র্যান্ডিং হবে না, ওসব কেউ মাথায়ই আনবে না। আসবে কনটেন্ট, নিজের দেশের সিনেমার পর্দায় কি চলছে সেটা। তারকাদের ঘরে কি চলছে সেটা নয়। ওটা তারা আলোচনা করুক, যারা চায় এই দেশে সিনেমা বন্ধ হয়ে যাক- তারা তিলকে তাল করবে। আপনারা জাস্ট ইগনোর করুন। কথা বলা, শেয়ার করা বন্ধ করে দিন। আপনাদের আগ্রহ কমলে সব বন্ধ হয়ে যাবে। সবার ঘরেই নানা প্রবলেম থাকে, ওগুলো নিয়ে কথা বলার কী আছে? কনটেন্ট নিয়ে কথা বলুন। আলোচনা করুন, সমালোচনা করুন, ভালো কাজকে অনুপ্রেরণা দিন। সত্যি বলছি— ভালো কাজ আপনারা যা দেখেন এই দেশে তা খুব কষ্ট করে হয়। চোখে পানি চলে আসার মতো কষ্ট করে। আমার একার না, সবার। সবাই কষ্ট করে। এই কষ্টকে মূল্যায়ন করুন। ব্যক্তিগত জীবনে কারও ভুল বা খামখেয়ালিকে নয়। আপনারা এসব নিয়ে আগ্রহ কমালে সব কমে আসবে ক্রমান্বয়ে।
আজীবনই পৃথিবীতে কেচ্ছা-কাহিনির জনপ্রিয়তা বেশি। কিন্তু এটা বাংলাদেশের সিনেমা মূলত মেইনস্ট্রিম সিনেমা। বিনির্মাণের সময় আমরা অনেক পরিচালক, রাইটার, শিল্পী- কলাকুশলীরা প্রাণপণে চেষ্টা করছি। এ বিনির্মাণে সবার দায়িত্বশীল আচরণ প্রয়োজন। কষ্ট করতে আমরা রাজি আছি, আরও করব, নিজেদের উন্নত করব। আমাদের মোটিভেশন দরকার। অল্প অল্প করে জমা হতাশা একসঙ্গে হয়ে আমাকে-আমাদের মেরে ফেলতে পারে। বাংলাদেশের সিনেমার ভীষণ সম্ভাবনা। তুচ্ছ কারণে সেটা নষ্ট না করি।