ইলন মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করে টুইটারের মালিকানা পেয়েছেন। কিন্তু অনেকেই বলছেন, টুইটারের দাম এত নয়। বেশি দামে টুইটার কিনে ঠকেছেন মাস্ক।
সম্প্রতি মাস্ক জানিয়েছেন টুইটারকে তিনি সুপার অ্যাপে পরিণত করতে চান। এ লক্ষ্যে মাস্ক অ্যাপটির নামও দিতে চাচ্ছেন ‘এভরিথিং অ্যাপস’।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মাস্কের এভরিথিং অ্যাপস ভবিষ্যতে গুগল-অ্যাপলকে টেক্কা দেবে। মাস্কের পরিকল্পনার এটি হবে এমন একটি অ্যাপ, যেটি ব্যবহার করে মানুষ বার্তা আদান-প্রদান, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং, অনলাইনে অর্থ লেনদেন, ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা থেকে শুরু করে সবকিছু করতে পারবেন।
মাস্ক যে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন, তাতে টুইটার যে বাজারের শীর্ষ টেক জায়ান্ট অ্যাপল ও গুগলের সঙ্গে সংঘর্ষের পথে যেতে পারে, তা তুলে ধরা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে।
সিএনবিসি লিখেছে, ‘টুইটার ২.০’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাস্ক যে পরিবর্তনগুলো আনতে চাইছেন, তা অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপ নীতিমালার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং এর ফলে উভয় কোম্পানির অ্যাপ স্টোর থেকে টুইটার অ্যাপ মুছে দেওয়া হতে পারে।
দ্য কনজারভেশনের একটি রিপোর্টে দেখা যায়, গুগল প্লে স্টোরে বর্তমানে ৩০ লাখ অ্যাপ রয়েছে, অ্যাপলে এর সংখ্যা ২০ লাখ। এগুলোর মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ অ্যাপস ব্যবসায়িকভাবে লাভ করতে পারে। এদিকে লাভ যাই হোক না কেন, গুগল-অ্যাপল অ্যাপগুলোর লভ্যাংশ থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন হিসেবে রেখে দেয়। অর্থাৎ একজন অ্যাপ মালিক ১০০ টাকা লাভ করলে ৩০ টাকাই দিতে হয় গুগল-অ্যাপলকে।
লাভ নিয়েই বসে থাকে না গুগল-অ্যাপল। যাতে করে কোনো অ্যাপ নিজেদের মতো ফিচার যোগ করে স্বাবলম্বী হতে না পারে তার জন্য অনেক অ্যাপের আপডেটেড ডেভেলপমেন্ট মুছে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে এ দুটি অ্যাপের বিরুদ্ধে। এমনটাই হয়েছিল স্ক্রাইবড অ্যাপ ও ফ্লিক টাইপ অ্যাপের সঙ্গে। স্ক্রাইবড অডিও বুক ও ফ্লিক টাইপ কিবোর্ডের ফিচার চালু করতে চাইলে অ্যাপল তাদেরকে নিজ স্টোর থেকে বের করে দেয়ার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল, যা অ্যাপল-গুগলের একাধিপত্যের পরিচয় দেয়।
যেখানে একটি অ্যাপ ডেভেলপ করতেই ৩০ হাজার ডলার থেকে ৩ লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ হয়, সেখানে আলাদা করে গুগল-অ্যাপলের সঙ্গে টেক্কা দেয়া অ্যাপ মালিকদের জন্য কষ্টসাধ্য। কিন্তু বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক যেভাবে উঠেপড়ে টুইটারকে সুপার অ্যাপ বানানোর লক্ষ্যে কাজ করছেন - এতে করে সহজেই ধারণা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে গুগল-অ্যাপলকে টেক্কা দিতে টুইটার হতে পারে বড় একটি মাধ্যম।