ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৯:৪১ এএম
চ্যাটজিপিটি সারাবিশ্বের প্রযুক্তি ব্যবহারে ইতিমধ্যেই দারুণ প্রভাব ফেলেছে। তবে অনেকেই মনে করছেন এই ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝতে পারা এবং সেভাবেই প্রত্যুত্তর দেওয়ার সিস্টেমটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে শিক্ষাব্যবস্থাকে। কাজ সহজ করতে যে ব্যবস্থার উদ্ভাবন তা আসলেই কতটা উপকারী কিংবা কতটা ক্ষতিকর এই নিয়ে আলোচনা সবার মাঝেই। প্রযুক্তির এই নয়া আবিষ্কার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নোয়াম চমস্কিও।
ইউটিউব চ্যানেল এডুকিচেনের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে চ্যানেলটির উপস্থাপক নোয়াম চমস্কিকে প্রশ্ন করেন, যদি চ্যাটজিপিটি মুহূর্তের মধ্যেই যেকোনো বিষয়ে অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে উত্তীর্ণ হওয়ার মতো রচনা লিখে ফেলতে পারে, তবে এই অ্যাকাডেমিক রচনার ভবিষ্যৎ কী?
চমস্কির উত্তর ছিল, "দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপকদের কাছে শিক্ষার্থীরা চুরি করছে কি-না তা পরীক্ষা করার প্রোগ্রাম ছিল। এখন এটা আরও কঠিন হয়ে পড়বে, কারণ চুরি করা এখন আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। এটাই শিক্ষাক্ষেত্রে এই প্রোগ্রামের একমাত্র অবদান।"
চ্যাটজিপিটি ব্যবহার নোয়াম চমস্কির কাছে স্রেফ 'অত্যাধুনিক চৌর্যবৃত্তি' এবং 'না শিখতে চাওয়ার রাস্তা'। তিনি এর সাথে স্মার্টফোনের উত্থানকে তুলনা করেন।
নোয়াম চমস্কি বিশ্বাস করেন, চ্যাটজিপিটি হয়তো অন্যান্য ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে, তবে শিক্ষার ক্ষেত্রে নয়।
চমস্কির মতে, অনেক শিক্ষার্থীই আছে, যারা ক্লাসরুমে বসেই তাদের আইফোনে অন্যদের সাথে চ্যাটিং করে। এটি থামানোর একটি উপায় ক্লাসরুমে আইফোন নিষিদ্ধ করা। আরেকটি উপায় ক্লাসকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা।
শিক্ষার্থীদের না শিখতে চাওয়ার আগ্রহ এবং নিজেদের শেখার বদলে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার 'শিক্ষাব্যবস্থা পতন'-এর একটি চিহ্ন। শিক্ষা যদি শিক্ষার্থীদের কাছে "আকর্ষণীয় না হয়, তাদেরকে আগ্রহী না করে তোলে, তাদেরকে চ্যালেঞ্জ না করে, তাদেরকে শেখার কাজে উদ্বুদ্ধ না করে, তারা শিক্ষাব্যবস্থা থেকে দূরে চলে যাবে।"
তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করেন, যখন এক বিরক্তিকর রসায়ন কোর্সে পাশ করার জন্য তিনি এক বন্ধুর নোটখাতার সাহায্য নিয়েছিলেন।
ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় এমআইটিতে শিক্ষকতা করে কাটানোর পর চমস্কি এখন পুরোদমে বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করছেন।