কর্ণাটকে হাইস্কুল-কলেজ বন্ধ, ভাইরাল হওয়া শিক্ষার্থী যা বললেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২, ১০:৩৯ এএম

কর্ণাটকে হাইস্কুল-কলেজ বন্ধ, ভাইরাল হওয়া শিক্ষার্থী যা বললেন

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্নাটক রাজ্যে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে প্রতিবাদ বেড়ে যাওয়ায় তিন দিনের জন্য সব হাইস্কুল এবং কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের কিছু কিছু জায়গায় পাথর নিক্ষেপকারী প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে সবার প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার ভারতের কর্ণাটকে একটি কলেজে যাওয়ার পথে গেরুয়া ওড়না পরা একদল যুবকের বিরুদ্ধে একা দাঁড়িয়ে হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থী মুসকানকে 'আল্লাহু আকবার' বলে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। মুসকানের প্রতিবাদের সেই ঘটনা ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দেখা দেওয়ায় তিনদিনের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাদেশিক সরকার।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কর্ণাটকের মান্ডিয়া কলেজে এক দল গেরুয়া ওড়না পরা যুবকের স্লোগান ও চিৎকারের মুখে পড়েন মুসকান। তবে তাদের বিরুদ্ধে একই রুকে দাঁড়ান দৃঢ় মনোবল নিয়ে।  

ওই যুবকরা যখন 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান দিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছিলেন, মুসকানও পাল্টা 'আল্লাহু আকবার' বলে স্লোগান দেন। তারা যখন মুসকানের পিছু পিছু আসছিল তখনও মুসকান 'আল্লাহু আকবার'... 'আল্লাহু আকবার' বলছিলেন। এক পর্যায়ে ওই কলেজের কর্মকর্তারা তাকে যুবকদের কাছ থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বিষয়টি সম্পর্কে মুসকান বলেন, “আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম না। শুধুমাত্র বোরকা পরে থাকার কারণে তারা আমাকে কলেজে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলেন না। তারা ‘জয় শ্রী রাম’ বলে চিৎকার করছিলেন। আমিও  জবাবে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করছিলাম। পরে কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রভাষকরা আমাকে সমর্থন করেছিলেন এবং আমাকে রক্ষা করেছিলেন।

মুসকান আরও বলেন, “ওই দলের মাত্র ১০ শতাংশ ছিল কলেজের ছাত্র এবং বাকিরা ছিল বহিরাগত। আমাদের অগ্রাধিকার আমাদের শিক্ষা। তারা আমাদের শিক্ষা পরিবেশকে নষ্ট করছে।”

এদিকে কর্ণাটকের কলেজগুলোতে হিজাব পরা শিক্ষার্থী ও গেরুয়া ওড়না পরা যুবকদের মধ্যে বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারির শেষের দিকে উদুপি সরকারি মহিলা কলেজে যখন ছয় ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে ক্লাস করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন, তখন থেকে এই বিক্ষোভের শুরু।

মুসকান এনডিটিভিকে আরও বলেন, বিক্ষোভের শুরু গত সপ্তাহে। আমরা সব সময় বোরকা ও হিজাব পরতে অভ্যস্ত। আমি ক্লাসে হিজাব পরতাম এবং বোরকা খুলে ফেলতাম। হিজাব আমাদের অংশ। অধ্যক্ষ এ নিয়ে কখনও কিছু বলেননি। বহিরাগতরা এটি শুরু করেছে। অধ্যক্ষ আমাদের বোরকা না পরতে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা হিজাবের জন্য বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।”

বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রী আরও জানান, “তার হিন্দু বন্ধুরা তাকে সমর্থন করেছে। আমি নিরাপদ বোধ করছি। সকাল থেকে সবাই বলছে, আমরা আপনাদের সাথে আছি।”

Link copied!