কাবুলের সড়ক দেয়ালে নারীদের ছবি মুছে দিচ্ছে তালেবান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১৬, ২০২১, ১২:২৮ এএম

কাবুলের সড়ক দেয়ালে নারীদের ছবি মুছে দিচ্ছে তালেবান

উত্থান-পতন-উত্থানের মধ্য দিয়ে আবারও দেশের শাসনভার কব্জা করতে যাচ্ছে সশস্ত্র সংগঠন তালেবান। দুই দশক পর আবারও তালেবান শাসন শুরু হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে। তার আগেই কাবুলের বিভিন্ন দেয়াল থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে নারীদের ছবি। রবিবার কাবুলে ঢুকেই তালেবান সদস্যরা সড়কের পাশের দেয়ালে আঁকা বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত নারীদের ছবি মুছতে শুরু করে। 

আফগানিস্তানের টেলিভিশন স্টেশন টোলো নিউজের প্রধান লুৎফুল্লাহ নাজাফিজাদা এদিন এরকম একটি ছবিও টুইটারে ছেড়ে দিয়েছেন যাতে দেখা যায় এক তালেবান সদস্য রাস্তার পাশের দেয়ালে আঁকা এক নারীর ছবি সাদা রঙ দিয়ে মুছে দিচ্ছেন। পণ্যের বিজ্ঞাপন হিসেবে থাকা নারীদের এসব ছবি মুছে তালেবান পরিষ্কার একটি ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

গত তিন মাসে একের পর এক শহর দখল করে তালেবান যোদ্ধারা। রবিবার তারা আফগানিস্তানের রাজধানী শহর কাবুলে প্রবেশে করে একরকম বিনা বাধায়। 

রক্তপাত এড়াতে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির সরকার এখন তালেবানের হাতে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে অন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে। এরমধ্যে জানা গেছে সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি পার্শ্ববর্তী দেশ তাজিকিস্তানের উদ্দেশে কাবুল ত্যাগ করেছেন।

দেশের বিভিন্ন এলাকা তালেবানের দখলে চলে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তার আশায় কাবুলে এসে আশ্রয় নিয়েছিল গত কয়েক দিন ধরে। এখন তারা আবার মরিয়া হয়ে কাবুল ছাড়ার চেষ্টা করছেন। প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে যাওয়ার আশায় অনেকেই ভিড় করেছেন সীমান্তে।

বিবিসি লিখেছে, তালেবান বাহিনীর অগ্রযাত্রার মধ্যে কাবুলে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত নারীরা গত কয়েক দিন ধরেই সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করছিলেন।

Image
৭০-এর দশকে আফগান নারীরা। ছবি: টুইটার

১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবানি শাসনামলে আফগানিস্তানে নারীদের মুখ, চুলসহ সম্পূর্ণ দেহ ঢাকা বোরখা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। বয়ঃপ্রাপ্ত হলেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। শরিয়া আইনের নামে তারা চালু করেছিল চুরির অপরাধে হাত কেটে ফেলার শাস্তি। আর বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে দোররা এবং পাথর ছুড়ে হত্যার মত ভয়ঙ্কর সব শাস্তিই হওয়া উচিত বলে এখনও তালেবান বিশ্বাস করে।

তবে তালেবানের একজন মুখপাত্র অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নারীর অধিকার আর সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি তাদের যোদ্ধারা ‘সম্মান’ দেখাবে। তবে বাস্তবে তা হচ্ছে না বলেই খবর আসছে দেশটির নানা স্থান থেকে। 

সূত্র: বিবিসি ও এএফপি

Link copied!