প্লাস্টিকে ছেয়ে গেছে চন্দ্রনাথ পাহাড়!

চন্দ্রিমা চৌধুরী

আগস্ট ২৩, ২০২১, ০২:৩৬ এএম

প্লাস্টিকে ছেয়ে গেছে চন্দ্রনাথ পাহাড়!

‘অনেক দিন থেকেই আমার একটা পাহাড় কেনার শখ, কিন্তু পাহাড় কে বিক্রি করে তা জানি না।‘- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মত এমন পাহাড় কেনার শখ কারো হোক না হোক, পাহাড় জয়ের নেশা কম বেশি সবারই আছে। হয়ত এই ইচ্ছা নিয়েই প্রতিদিন কয়েকশ'রও বেশি পর্যটক ভিড় করেন সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। আড়াই ঘণ্টা ট্র্যাকিং করে, দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছাতে হয়। আর ফেরত আসার সময় উপহার সমেত প্রকৃতির কোলে ফেলে আসেন প্রচুর প্লাস্টিক।

করোনার প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এই সুযোগে পাহাড় শৃঙ্গগুলো যেন আরও সবুজ আরও নবীন হয় ওঠে। গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে খুলে দেয়া হয়েছে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এরপর দু'দিনে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার হওয়ায় ভ্রমণ পিপাসীদের জন্য বিষয়টি ছিল যেন শাপে বর। তবে প্রকৃতির জন্য এ সংবাদ কতোটা সুখের তা বলা দায়!

পাহাড়ে ওঠার সময় পর্যটকদের সুবিধার্থে বসানো আছে ছোট ছোট দোকান। সেখানে তারা খাবার পানি, স্যালাইন, লেবুর শরবত, চিপস সহ নানান খাবার খান। খাবার শেষে বেশির ভাগই এসব প্লাস্টিক পণ্য যত্রতত্র ফেলে চলে যান।

চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছাবার ঠিক পাঁচ মিনিটের দূরত্বে একটি ছোট দোকান রয়েছে আবুল কালাম আজাদের। দৈনিক তার দোকানে বিক্রি হয় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা, কখনো তারও বেশি। তিনি বলেন, ‘এখানে ঝুড়ি রাখা হয় ময়লা-প্লাস্টিক ফেলার জন্য। কিন্তু, সেগুলো কেউ ব্যবহার করেন না। চারপাশে প্রতিদিন এমন প্লাস্টিকে ভরে ওঠে। নিচ থেকে ভাড়া করে লোক এনে এগুলো পরিষ্কার করাই।’

তিনি আরও বলেন, 'এখন যেহেতু বর্ষার সময় এসব ময়লা বৃষ্টির পানিতে নিচে চলে যায়।’

এ সকল প্লাস্টিক দ্রব্য বছরের পর বছর এভাবেই জমতে থাকে পাহাড়ের উপত্যকাগুলোতে। যা ব্যাপক ভাবে পরিবেশের ক্ষতি করে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্রে প্লাস্টিক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই উদ্যোগ খুব একটা সফল হয় নি।

এ বিষয়ে পাহাড়ের স্থানীয়রা বলেন, নিজেদের মধ্যে সচেতনতা না থাকলে তো সরকার বলে কিছু করাতে পারবে না। আমরা রোজ এগুলো পরিষ্কার করাই। সেই সাথে মানুষ আরেকটু সচেতন হলেই হত।

মাত্র কয়েকদিন হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলেছে। এরই মধ্যে মানুষের কলোরবে ছেয়ে গেছে শান্ত, শীতল চন্দ্রনাথের চূড়া। প্রথম তিন দিনেই প্লাস্টিকে ছেয়ে গেছে পাহাড়ের পাদদেশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দিরের পরিচালনা কমিটি বিষয়টি দেখাশোনা করে। তারা এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন।

Link copied!