সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালে কুমিল্লার একটি মন্দিরের পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখাকে কেন্দ্র করে দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হয়েছে৷
দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ, মন্দিরসহ হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়ে পৌনে চার ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। শাহবাগে এখন যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে, সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অবস্থান নেওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় জড়ো হন জগন্নাথ হলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসেন।
এ সময় তারা ‘সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় করতে হবে’, ‘মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’- এসব স্লোগান দেয়। অবরোধ থেকে তারা সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও মণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর ও প্রাণহানির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই।’
ঢাবির জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য যারা দায়ী, সেই ধর্মান্ধ গোষ্ঠী দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এমন হামলার ঘটনা দেখতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।’
প্রতিবাদী বিক্ষোভ শুরু করলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল। অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে পল্টন, সায়েন্স ল্যাব, বাংলামোটর ও টিএসসি অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
প্রসঙ্গত, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা চলাকালে ও পূজা শেষ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও মণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর ও প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন।