তিন বছর আগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের দেওয়া ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে ও বাসে হাফ ভাড়ার দাবিতে সোমবারও (২৯ নভেম্বর) রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। এদিন দুপুরে রাজধানীর শাহবাগসহ বিভিন্ন সড়কে বিক্ষেভ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে জনজীবন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দাবি মানার জন্য ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। আজ(সোমবার) সময়সীমা পর্যন্ত দাবি মানা না হলে মঙ্গলবার থেকে বিআরটিএ কার্যালয়সহ লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ২৮ বছর ধরে চলছে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন
এসময় বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা। নিরাপদ সড়ক ও বাসে হাফ ভাড়া কার্যকরের প্রজ্ঞাপনসহ ৯ দফা দাবি বাস্তাবায়ন চান তারা। দাবি মানা না হলে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয় ঘেরাও এর ঘোষণা দেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।
২.নৌপরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না।
৪. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
৫. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬.প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে।
৭. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে।
৯. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, শনিবার(২৭ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার রাপা প্লাজার সামনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। রবিবার (২৮ নভেম্বর) ও তার পরের দিন (সোমবার) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানেও তারা বিক্ষোভ করার ঘোষণা দেয়।
ওইদিন শিক্ষার্থীরা জানায়, ৯ দফা দাবি আদায়ে গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) তারা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এক সপ্তাহ সময় চেয়েছে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ওই দিন দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিআরটিএ কার্যালয় ঘেরাও করবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, কোনো ধরনের ভাঙচুর করার জন্য তারা সড়কে নামেনি। ২০১৮ সালের আন্দোলনের সময় ৯ দফা দাবি তুলেছিল তারা। সরকার বলেছিল, দাবিগুলো মানা হয়েছে। কিন্তু একটি দফাও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। এবার ৯ দফা মানা না হলে আগামী মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) থেকে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।