হুমায়ূন আহমেদের সেরা কিছু বই

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ১৯, ২০২৩, ০৪:২০ পিএম

হুমায়ূন আহমেদের সেরা কিছু বই

ছবি: ফেসবুক

রসবোধের সাথে লৌকিকতা আর অলৌকিকতার সমগ্র সুন্দরের মিশেলে বাংলা কথাসাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে যিনি সমৃদ্ধ করেছেন, তিনি হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর কলম থেমে গেলেও কর্ম অবিচল। গুণী এই কথাশিল্পীর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ছিলেন নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, কবি ও গীতিকার। সাহিত্যের সব জায়গায় ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। কখনও আবার রং-তুলির ছোঁয়ায় রাঙিয়েছেন ক্যানভাসের রংহীন সাদা স্থান। পিছিয়ে ছিলেন না নির্মাণেও। ছোটপর্দা, বড়পর্দায় তার নানা সৃষ্টি বাঙালির মনে দাগ কেটে থাকবে হাজার বছর। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক।

নতুন প্রজন্মের অনেকেই হুমায়ুন আহমেদের বই কেনার সময় সংশয় বোধ করে। তাই হুমায়ুন আহমেদের সেরা কিছু বইয়ের নাম তুলে ধরা হলো।

জোছনা ও জননীর গল্প

উপন্যাসটির মূল বিষয়বস্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক। এখানে অনেক পরিচিত মুখের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পর্কে জানা যাবে। যেমন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ইন্দিরা গান্ধী সহ অনেকের কথা। আছে স্বাধীনতার বিজয়গাঁথা , তৎকালীন মানুষের জীবন সংগ্রাম , ক্ষোভ , হতাশা , আনন্দ , বিজয়, পাকিস্তানি বাহিনীর নানা নিপীড়ন ও অত্যাচারের কথা। উপন্যাসে বারবার উঠে এসেছে বীভৎস সেই ভয়াবহতার চিত্রগুলোই।

মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে দেশান্তরিত হয়েছে । অনেকে হারিয়েছে প্রিয়জনকে। আজ আমরা স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষের অনুভূতি গুলো তখন মুক্তিযুদ্ধের সময় কেমন ছিল তা লেখক ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন এই বইটিতে।

দেবী

দেবী বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত একটি রহস্য উপন্যাস। এটি ১৯৮৫ সালের জুন মাসে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে মিসির আলি চরিত্রের পরিচয় ঘটে। মিসির আলী মানুষের মন নিয়ে প্রচুর পড়ালেখা করেন এবং মাঝে মাঝে অতিপ্রাকৃতিক বা অলৌকিক বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেন। দেবী উপন্যাসে দেখা যায় রানু নামের এক নববিবাহিত মহিলার অলৌকিক ক্ষমতা ও মানসিক সমস্যার সমাধানের জন্য তার স্বামী আনিস মিসির আলীর স্মরণাপর্ন হন। এই সমস্যা কে এবং সেটির সমাধানের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের ঘটনাবলী সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু এই অলৌকিক শক্তির উৎস আসলে কোথায়? রানু কীভাবে এই শক্তি পেল? সকল প্রশ্নের উত্তর আছে বইটিতে। তবে এইটি ভৌতিক কোন বই নয়, তবুও রাতের অন্ধকারে একাকী নির্জন ঘরে বসে বইটি পড়লে এর রহস্যময়তা পুরোপুরি অনুভব করা যায়।

দিঘির জলে কার ছায়া গো

দিঘির জলে কার ছায়া গো উপন্যাসটি  হিমু চরিত্র যারা পছন্দ করেন শুধু তাঁদের কাছে নয়, বরং হুমায়ুন আহমেদের প্রায় সকল শ্রেণীর পাঠকদের কাছেই উপন্যাসটি প্রশংসা কুড়িয়েছে।

উপন্যাসের মূল চরিত্রের নাম মুহিব। মুহিবের ‘মুহি‘ অক্ষর দুটি উলটো করে লিখলে ‘হিমু‘ হয়। মুহিবের নিজের নামের কারণে বা অন্য কোনো ভালো লাগা থেকেই হোক সে হিমুর ব্যাপারে পাগল। সে হিমুর মতো হতে চায়, খালি পায়ে হাঁটতে চায়, তার অধিকাংশ কাজকে অনুসরণ করতে চায়। হিমুর অনেক কথা তাকে বিভিন্ন সময় সান্ত্বনা দিয়ে থাকে। উপন্যাসের নাম ‘দিঘির জলে কার ছায়া গো’ মূলত একটি নাটকের নাম। যে নাটকে মুহিব অভিনয় করেছিল। এই নাটক করে সে অনেক খ্যাতি পেয়েছিল তাই আর নাটক ছাড়তে পারে নি।

এছাড়াও নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, মধ্যাহ্ন, দেয়াল, আগুনের পরশমনি, ময়ূরাক্ষী, দারুচিনি দ্বীপের মত সৃষ্টিগুলো তাঁকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখবে সবার মনে। তবে হিমু চরিত্রের স্রষ্টা হিসেবে তিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

Link copied!