ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। সারা দেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হবে ‘নজরুলজয়ন্তী’। জাতীয় পর্যায়ে কুমিল্লায় আজ রোববার শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। অনুষ্ঠানগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে অন্তিম শয্যায় আছেন জাতীয় কবি। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আজ সকাল সোয়া ছয়টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হবেন। সেখান থেকে তাঁরা সকাল সাড়ে ছয়টায় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা নিয়ে কবির সমাধিতে যাবেন এবং সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। পরে উপাচার্যের সভাপতিত্বে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বাসসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ দিন কবির অন্য অনুরাগীরাও তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন।
কর্মসূচি
বাসস জানিয়েছে, জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২৫, ২৬ ও ২৭ মে কুমিল্লায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আজ বেলা তিনটায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী এবং কবির পৌত্রী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খিলখিল কাজী।
স্মারক বক্তৃতা করবেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এবং স্বাগত বক্তৃতা করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।
অনুষ্ঠানে ‘নজরুল পুরস্কার ২০২৩ ও ২০২৪’-এর জন্য মনোনীত গুণীজনদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘চেতনা ও জাগরণে নজরুল’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।
কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ, মা জাহেদা খাতুন। দরিদ্র পরিবারে জন্মের পর দুঃখ-দারিদ্র্য ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তার ডাকনাম ছিল দুখু মিয়া।
কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্র-উত্তর বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ। তিনি কবিতা, গান ও উপন্যাসে সাম্প্রদায়িকতা, সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।
অনন্ত প্রেরণার উৎস নজরুল কোমল আর কঠিনে মেশানো এক অপূর্ব ব্যক্তিত্ব। প্রেমে পূর্ণ, বেদনায় নীল; আবার প্রতিবাদে ঊর্মিমাতাল।