নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৩:০২ পিএম
‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’র রচয়িতা কবি অরুণ চক্রবর্তী মৃত্যুবরণ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। চুঁচুড়ার ফার্ম সাইড রোডের বাড়িতেই মৃত্যু ঘটে তার।
চুঁচুড়া ফার্ম সাইড রোডে অরুণের বাড়িvaর নাম ‘সোনাঝুরি’। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, দুই পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতিরা রয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন অরুণ। শুক্রবার কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গলমহল অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখান থেকেই কিছুটা ঠান্ডা লেগেছিল, জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। কবির পুত্রবধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, করোনার পর থেকেই তাঁর ফুসফুসে সমস্যা ছিল।
সান্তাক্লোজের মতো লাল পোশাক পরে কাঁধে ঝোলা নিয়ে ঘুরতেন অরুণ। মাথায় বাঁধতেন রঙিন রুমাল। ঝোলায় চকোলেট রাখতেন। ছোটোদের দেখলে চকোলেট দিতেন।
তাঁর প্রয়াণে ভারত ও বাংলাদেশের বাংলাভাষী কবি-সাহিত্যিক মহলে শোকের ছায়া নেমেছে।
ভারতের জাতীয় পুরস্কার পাওয়া কবির জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে কলকাতার বাগবাজারে। পেশায় তিনি ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। একসময় সরকারি চাকরি করলেও অরুণ কুমার চক্রবর্তী মূলত কবি।
তাঁকে পরিচিতি এবং খ্যাতি এনে দিয়েছিল ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা’। ওই কবিতা পরে গান হয়ে লোকের মুখে মুখে ফিরেছে। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও অরুণের পরিচিতি তৈরি করে দেয় এই গান। বাংলার লোকসংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতেন অরুণ। ঘুরতেন পাহাড়, জঙ্গল এবং আদিবাসী এলাকায়। ‘লাল পাহাড়ের’ সুরেই অমর হয়ে থাকবেন কবি।
অরুন চক্রবর্তীর লেখার ক্ষেত্র ছিল বিস্তৃত –রাজনীতি, শিক্ষা থেকে শুরু করে লোকসংগীত; সাধারণ মানুষের কথা লিখতেন তিনি। সবচেয়ে বেশি লিখতেন প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অরুণের দেহ বাড়ি থেকে চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে মুক্তমঞ্চে শায়িত থাকবে দেহ। কবির গুণগ্রাহীরা সেখানে গিয়েই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। পরে শ্যামবাবুর ঘাটে কবির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।