ছবি: সংগৃহীত
ছাত্রলীগ কর্মীদের নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার কথা বলেছেন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সোমবার, ০৩ মার্চ এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহসিকতার প্রতীক, মুক্ত চিন্তার এক প্রতিচ্ছবি-আবরার ফাহাদ। মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫-এ ভূষিত হওয়া তার আত্মত্যাগের স্বীকৃতি। তার আদর্শ আমাদের আলোকিত করে, ন্যয়বিচারের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়। জাতি তোমাকে ভুলবে না, আবরার!’’
স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সরকার এই পুরস্কার দেয়। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, ৩ লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জাতীয় পুরস্কারসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, “কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এবছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে।”
আর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, “আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দল ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হত। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।”
দুই উপদেষ্টা রোববার পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের কারো নাম না বললেও সোমবার আবরার ফাহাদের নাম সামনে আনলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই ঘটনা সারা দেশে তুমুল ক্ষোভের জন্ম দেয়।
আবরারের বাবা রাজধানীর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচার শেষে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর মামলার রায়ে বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
দণ্ডিত ওই ২৫ জনের সবাই ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি ও আসামিদের ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় আছে।