বেটা
বাংলাদেশে আর যেন ’৭৫ এর মত হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের পুনারাবৃত্তি না ঘটে এবং আর কোন শিশুকে যেন রাসেলের ভাগ্যবরণ করতে না হয় সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর বাসস’র।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর ররহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেল’র ৫৮ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ এর উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
কী অপরাধ ছিল ছোট্ট রাসেলের-এ প্রশ্ন রেখে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশের আর কোন শিশুর জীবনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। তাদের জীবন যাতে সুন্দর হয়। কারণ, একজন শিশুকে হত্যা করা মানেই লাখো কোটি শিশুর জীবনকে শংকায় ফেলে দেয়া।’
আত্মবিশ্বাস, আত্মমর্যাদা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠবে দেশের নতুন প্রজন্ম-এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের শিশুরা একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে, আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে গড়ে উঠুক। আমাদের শিশুদের ভেতরে যে সুপ্ত যে জ্ঞান বা প্রতিভা, সে প্রতিভা বিকশিত হোক। আর, আগামী দিনে বাংলাদেশ যেন স্বাধীন বাংলাদেশের আদর্শ নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে, সেটাই আমাদের আকাঙ্ক্ষা, সেটাই আমরা চাই।’
রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবারের মতো পালিত ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২১’ এর প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’- যথার্থ হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুদের ভেতরের যে সুপ্ত প্রতিভা এবং জ্ঞান রয়েছে তা বিকসিত হোক এবং আগামীর বাংলাদেশ যেন স্বাধীন বাংলাদেশের আদর্শ নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গড়ে উঠতে পারে।
তাঁর সরকার একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায় উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, যে দেশে কোন অন্যায়-অবিচার থাকবেনা। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বন্ধ থাকার পর এখন তার সরকার ধীরে ধীরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মিশুদের মনযোগ দিয়ে লেখা-পড়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, অন্য সম্পদ চুরি হতে পারে বা হারাতে পারে। কিন্তু লেখাপড়া এবং শিক্ষা এটা এমন একটা সম্পদ যেটা কেউ কারো কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে না।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব ও আফসার জাফর সৃজিতা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পরিবেশিত শেখ রাসেলের দুরন্ত শৈশব ভিত্তিক অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা ‘শেখ রাসেল এক অনন্ত বেদনার কাব্য’ এবং ‘থিম সং’ পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্পকলা-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু-এ ৫টি ক্যাটাগরিতে প্রতিটি ১ ভরি করে ১০টি ‘শেখ রাসেল স্বর্ণ পদক’, ১০টি ল্যাপটপ ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এছাড়া, শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের ১০টি ল্যাপটপ এবং লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলমেন্ট প্রকল্পের (এলইডিপি) আওতায় প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে হতে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মাঝে ৪ হাজারটি ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে শেখ রাসেল জাতিয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে সারাদেশে আয়োজিত ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
একইসঙ্গে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং স্টেডিয়াম প্রান্তে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী রোলার স্কেটিং প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং ‘শেখ রাসেল শৈশবে ঝড়ে যাওয়া ফুল’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রকাশিত ‘শেখ রাসেল দৃপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক ও উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বে শেখ রাসেল জাতিয় শিশু কিশোর পরিষদের উদ্যোগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পরিবেশিত হয়।
উল্লেখ্য, শিশু রাসেলের জীবন সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর তাঁর জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবারের মতো পালিত ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২১’ এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে-‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’।
-20241204222047.webp)
