প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের আলাদ নামকরণ করা হয় ও সেগুলো একেবারেই অপরিচিত। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এই অদ্ভুত নামকরণের কারণ কী? কাদের হাত আছে এর পেছনে? আসুন সেই সম্পর্কেই আজকে জেনে নেই-
১৯৪৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। পূর্বনির্ধারিত একটি নামের তালিকা থেকে একেকটি ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। কোনো ঝড়ের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার অর্জন করে, তাহলে তাকে একটি নাম দেওয়া হয়।
১৯৯৯ সালে ওডিশায় ঘূর্ণিঝড়ের পর ২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) ও এসক্যাপ তাদের বৈঠকে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরুর বিষয়ে একমত হয়। ২০০৪ সালে প্রথম অনিল ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়।
কেন এই নামকরণ?
জাতিসংঘের অধীনস্থ, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) তথ্যানুযায়ী, একটি সুনির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলে একই সময়ে একাধিক ঘূর্ণিঝড় হতে পারে এবং তা এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় টিকে থাকতে পারে। তাই বিভ্রান্তি এড়াতে, ঘূর্ণিঝড় বিষয়ক সচেতনতা ছড়াতে এবং ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা ও প্রশমনের জন্য প্রতিটি ক্রান্তীয় ঝড়েরই একটি করে নাম দেয়া হয়। তাছাড়া নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায় না।
তবে নামকরণের সময় খেয়াল রাখা হয়, যে দেশ নাম রাখবে তার সঙ্গে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। ওই শব্দ যেন কাউকে আঘাত না করে। কোনও রকম ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ বা আতঙ্ক ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে এমন নামও রাখা যায় না। কোনও ধর্মীয় সম্পর্ক বা ব্যক্তি নামও ব্যবহার করা হয় না।
নাম কিভাবে ঠিক করা হয়?
এখানে-সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শত শত কেন্দ্র, উপকূলীয় ঘাঁটি ও সমুদ্রে অবস্থিত জাহাজগুলোতে ঝড়ের তথ্য পাঠানোর জন্য যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণযোগ্য নাম ঠিক করা হয়। পুরনো জটিল পদ্ধতিতে অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ দিয়ে নির্ণয়ের চাইতে এই প্রক্রিয়া অনেক বেশি সহজ এবং এতে ভুল কম হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কারা করেন?
বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্র অববাহিকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহাওয়া দফতর (আরএসএমসি) এবং ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ওয়ার্নিং সিস্টেমস (টিসিডব্লিউএস)- এর উপর।
২০০৪ সাল থেকে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে।