আগস্ট ২৮, ২০২১, ০১:৩৪ এএম
জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের অহংকার ও গর্বের সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীকে কলঙ্কিত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে দিনাজপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ এর আয়োজন করে।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আইন করে শুধু পঁচাত্তরের খুনীদের রক্ষাই করে নাই; তাদের বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়েছিল। জয় বাংলা নিষিদ্ধ করেছিল। দালাল আইন বাতিল করে একাত্তরের রাজাকারদের পুনর্বাসন করেছিল। শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিল। গোলাম আজমকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। যার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল। এরপরও আমাদের বলতে হবে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে খুন করে নাই!
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ৮১ সাল পর্যন্ত বেঁচেছিলেন। এর মধ্যে ১৮টি ক্যু হয়েছিল। যেখানে জিয়াউর রহমান বিনা বিচারে হাজার হাজার সেনা-নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের ফাঁসি দিয়েছিলেন। এখনো অনেক পরিবার জানেনা তাদের সন্তান কোথায় আছে। গুম-খুন-হত্যায় জিয়াউর রহমান পৃথিবীর ইতিহাসে রেকর্ড তৈরি করেছেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর কোথাও প্রতিবাদ হয়নি এটি সত্য নয় মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেদিন অস্ত্রের মুখে টুঙ্গিপাড়ায় প্রতিবাদ হয়েছিল। জানাযা না পড়েই বঙ্গবন্ধুকে দাফন করতে চেয়েছিল। কিন্তু টুঙ্গিপাড়ার মানুষ এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তারা বলেছিল, একজন মুসলমানকে জানাযা না পড়ে দাফন করা যাবেনা। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে ইসলামী নিয়মে জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর জয় বাংলা নিষিদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুর কথা বললেই নেমে আসতে নির্যাতন, নীপিড়ন। এর মধ্যেও সেদিন ছাত্রলীগ মিছিল ধরেছিল ‘এক মুজিবের রক্ত থেকে, লক্ষ মুজিব জন্ম নিবে’। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কখনো রাজপথ থেকে পিছু হটে নাই। খুনী মুশতাকের আগামাসী লেনের বাড়িতে আক্রমণ করতে গিয়ে অনেকে আটক হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসা হয়েছে। যেখানে অপরাধের বিচার হয়না, সেখানে আইনের শাসন থাকেনা। যে অপরাধীদের জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া পুরস্কৃত করেছিল, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করেছিল, মন্ত্রী বানিয়েছিল, সংসদ সদস্য বানিয়েছিল, তাদের বিচার হয়েছে। বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশ এখন সাংবিধানিক পথে হাটা শুরু করেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথেও বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে।
বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনীতির কথা তুলে ধরে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে মধ্যম আয়ের দেশ, উন্নয়নশীল দেশে পদার্পন করেছে। ২০০০ ডলার বেশি আমাদের মাথাপিছু আয়। বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর দিকে অর্থঋণের জন্য তাকিয়ে থাকেনা। বাংলাদেশ আজ নিজস্ব অর্থায়নে বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পদ্মাসেতু, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ী বন্দর, মোংলা বন্দর, বে টার্মিনালের মতো প্রকল্প বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক আমাদের পেছনে পেছনে ঘুরে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী। পৃথিবীর বিস্ময়। করোনা মহামারীতেও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ে নাই।
বোচাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বিপুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সৈয়দ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফছার আলী, পৌর মেয়র মো: আসলাম, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম ইশান।