শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হওয়ায় তাকে স্বাগত এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ছদ্মবেশে একদলীয় বাকশাল শাসন কায়েম করেছিল। ফলে গণতন্ত্রহীন হয়ে যায় বাংলাদেশ। ছাত্র-জনতার তুমুল বিক্ষোভ এবং আন্তর্জাতিক প্রবল চাপে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের তরুণ ছাত্র-শিক্ষক ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। এরপর সরকারের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও শপথ গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এটি একটি খুশির খবর। আমরা নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
এ সময় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, “স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ এখন একটি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণে এনে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। বিগত প্রায় ১৬ বছরে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার এবং মানবাধিকার হরণ করেছে। সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পঙ্গু করে দিয়েছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। দেশের এমন দু:সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। আমরা মনে করি সরকারের সামনে নানা চ্যালেঞ্জ আছে। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে গঠিত নতুন সরকার যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এসব সমস্যা মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটাধিকার এবং জনগণের সার্বিক প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
নেতৃদ্বয় ছাত্র-জনতাসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, “সবার প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে আপনারা সবাই সহিংসতা পরিহার করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করবেন। যার যার স্থানে থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ দেশপ্রেমিক জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। কোনও অপশক্তিকে নৈরাজ্য সৃষ্টির সুযোগ দিবেন না। সকলে উদ্ভূত পরিস্থিতি ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা এবং নতুন সরকারকে সহযোগিতা করুন।”