ছিটমহল প্রস্তাবের অংশ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের কাছে ইসরায়েল জানিয়েছে তারা যুদ্ধের পর গাজার সীমান্তে একটি ‘বাফার জোন’ চায়।
মূলত চলমান যুদ্ধ শেষে ভবিষ্যতে হামলা ঠেকাতেই এই পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান হয়।
আঞ্চলিক কয়েকটি সূত্রের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, মিসর, জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে এ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছে ইসরায়েল। এ ছাড়া কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকা সৌদি আরবকেও এ পরিকল্পনার কথা ইসরায়েল জানিয়েছে। এ ছাড়া, অ-আরব দেশগুলোর মধ্যে তুরস্ককেও এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে।
রয়টার্সের সাথে কথা বলার সময় একজন ঊর্ধ্বতন আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ৭ অক্টোবরের হামলার মতো পরবর্তীতে যেন হামাস অনুপ্রবেশ না করতে পারে সেজন্য ইসরায়েল একটি বাফার জোনের দাবি করছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈদেশিক নীতি পরামর্শক অফির ফাল্ক বলছেন, বাফার জোনের পরিকল্পনাটি একটি তিন স্তরের প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল যার মধ্যে প্রথমে হামাসকে নির্মুল করা হবে, তারপর গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করা এবং মৌলবাদ থেকে মুক্তি করা।
বাফার জোন তৈরির উদ্যোগের মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শেষের কোনো ইঙ্গিত না থাকলেও পরিষ্কার হয়েছে যে, কাতার বা মিসরের মতো আরব মধ্যস্থতাকারী ছাড়াও আলোচনা এগিয়ে নিতে সক্ষম হতে পারে ইসরায়েল।
নাম ও পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আঞ্চলিক একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে যে, গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে এই বাফার জোন চায় ইসরায়েল- যা উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত হবে। ভবিষ্যতে হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করবে এই বাফার জোন।
বাফার জোনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে মিসর, কাতার, তুরস্ক ও সৌদি সরকারের সাথে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স। মন্তব্যের জন্য জর্ডানের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আবুধাবির কাছে এ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইসরায়েল জানিয়েছে কিনা- তা জানতে চাইলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন কর্মকর্তা সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেছেন, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ফিলিস্তিন সহ সব পক্ষ যুদ্ধ পরবর্তী যে পরিকল্পনা করবে তাতে সমর্থন দেবে আরব আমিরাত।
বাফার জোন সম্পর্কে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈদেশিক নীতিবিষয়ক পরামর্শক অফির ফক বলেছেন, এই পরিকল্পনা আরও বেশি বিস্তৃত। তিন ধাপে করা হবে এই পরিকল্পনা। প্রথম ধাপে থাকবে হামাসকে নির্মূল করা। এরপর গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ এবং সম্পূর্ণ অঞ্চলকে মৌলবাদমুক্ত করা।
আরব দেশগুলোর সাথে আলোচনায় হামাস নির্মূলের কথা বলেছিলেন কিনা- এ প্রশ্নের কোনো বিশদ জবাব দেননি অফির ফক। আরব দেশগুলো অবশ্য আগেই হামাসকে নির্মূলের ধারণাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, হামাস একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর চেয়েও বেশি কিছু।
উল্লেখ্য, দুই পক্ষের মাঝখানে নিরপেক্ষ অঞ্চলকে বাফার জোন বলা হয়। সহিংসতা এড়াতে বাফার জোন তৈরি করা হয়। ইসরায়েলের পরিকল্পনা মতে, বাফার জোনের মাধ্যমে ইসরায়েল ও গাজাকে বিভক্ত করা হবে। এই নির্দিষ্ট জোনের মধ্যে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।