নভেম্বর ২০, ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটের প্রচারের শুরু থেকেই ঘোষণঅ দিয়েছেন, তিনি জিতলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন। ভোটে জিতেছেন ট্রাম্প; যুদ্ধ করার সিদ্ধান্তেও অটল রয়েছেন। কিন্তু তিনি গদিতে বসার আগেই চালাকি শুরু করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি।
যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে, প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা করেছে ইউক্রেন। এরপরই ক্ষেপে উঠেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এক সতর্কবার্তায় তিনি বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের নীতি শিথিল করেছে মস্কো। তার মানে হলো-রাশিয়ার ওপর যে কোনো আক্রমণের জবাবে পাল্টা আঘাত হবে অনিবার্য।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা চালায় ইউক্রেন। পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করে রাশিয়া। এছাড়া আরেকটির ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষের কারণে ওই এলাকায় একটি সামরিক স্থাপনায় আগুন ধরে গেছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেই যে, এই হামলা চালানোর হয়েছে, সেই অবশ্য এখনো ইউক্রেনের পক্ষ থেকে স্বীকার কয় হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, ওইসব ক্ষেপনাস্ত্র বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেনই ইউক্রেনকে দিয়েছিলেন। সূত্রের বরাত দিয়ে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটারের মতো দূরে কারাচেভ শহরের কাছে একটি ডিপোতে ওই হামলা হয়েছে। হামলার পর ১২টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সামরিক বাহিনীর
এদিকে পুতিনের সকর্তবার্তার পরও আতংক ছড়িয়েছে। কারণ নতুন নীতিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচলিত অস্ত্রের আক্রমণকেও অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশটি। এর অর্থ, কেবল পারমাণবিক আক্রমণ নয়, প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর হবে রাশিয়া।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ক্রেমলিনের নতুন নীতি মূলত এই ধরনের পদক্ষেপের জবাবে নিজেদের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে। পুতিনের এই নীতিগত পরিবর্তনের অংশ হিসেবে, রাশিয়া দেশব্যাপী মোবাইল বোমা শেল্টার নির্মাণ শুরু করেছে। ক্রেমলিনের দাবি, জনগণকে পারমাণবিক হুমকি থেকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ক্যাশ প্যাটেলকেই এফবিআই প্রধান করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার একটি ‘রেড লাইন’ নির্দেশ করছে। রাশিয়া এর মাধ্যমে স্পষ্ট করতে চাইছে যে, হুমকির মুখে তারা প্রতিরোধ নীতি সক্রিয় করবে, যা প্রতিপক্ষের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
এরি মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ ১,০০০ দিনে পেরিয়ে গেলো। এই যুদ্ধ এখন আর ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে। যুক্ত হয়েছে ইরানও। আর পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধ, নতুন করে বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।