হাইকোর্টের মন্তব্য

ডিবি কার্যালয়ে খাওয়ানোর ছবি প্রকাশ ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’

জাতীয় ডেস্ক

জুলাই ২৯, ২০২৪, ০৩:২২ পিএম

ডিবি কার্যালয়ে খাওয়ানোর ছবি প্রকাশ ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে ধরে নিয়ে গিয়ে খাবার খাইয়ে সেই ছবি প্রকাশ করাকে ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (২৯ জুলাই) রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

শুনানির একপর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, “টিভিতে দেখেছি, এই ছয়জন (সমন্বয়ক) কাঁটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে।”

একপর্যায়ে আদালত বলেন, “এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।”

এর আগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র আটক হওয়া ৬ সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতেও নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।

আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সারা হোসেন এবং আইনজীবী অনীক আর হক শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ শুনানিতে অংশ নেন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। শুনানি নিয়ে আদালত আগামীকাল মঙ্গলবার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

এর আগে গতকাল রোববার ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। পোস্টে তিনি লেখেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই ওদের ডিবি কার্যালয়ে এনে তাদের সাথে কথা বললাম। কি কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে! ওদের কথা শুনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের নানা পরিকল্পনার কথা জানানোর পর তাদের উদ্বেগ দূর হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টিম ডিবি ডিএমপি বদ্ধপরিকর।

এ-প্রসঙ্গে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি‍‍প্রধান বলেন, “হাইকোর্ট কি বলেছে আমরা এখনও জানি না, শুনি নাই। সেই মন্তব্য শুনে আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করবো।”

গত ২৬ জুলাই নিরাপত্তার কথা বলে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে হেফাজতে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে হেফাজতে নেওয়া হয় আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারকে। ২৭ জুলাই সারজিস, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকেও নেওয়া হয় ডিবি হেফাজতে।

ডিবি হেফাজতে থেকেই গতকাল রোববার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র ৬ সমন্বয়ক গতকাল রোববার সকল আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তবে এই ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে গতকালই নতুন করে আন্দোলনের ডাক দেন আরও কয়েকজন সমন্বয়ক।

Link copied!