বর্তমানে পেটের সমস্যা অত্যন্ত পরিচিত একটি রোগ। ইংরেজিতে যার পোশাকি নাম ইরিটেবল বোয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, বিশ্বের ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ এই রোগে ভুগছেন।
এই রোগের মূল উপসর্গগুলি হল তলপেটে ব্যথা, অন্ত্রের অসঙ্গত গতিবিধি ইত্যাদি। এই সমস্ত লক্ষণকে কখনই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। বরং সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মূলত কম বয়সীরাই এই রোগে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হন। এতে জীবনধারণের মান কমে যেতে পারে। কাজের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। মানুষের উৎপাদনশীলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এই রোগ।
উপসর্গ
শুধু ব্যথাই নয়, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই রোগের অন্যান্য় উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন মানসিক উদ্বেগ, হতাশা, ক্লান্তি ইত্যাদি। বিভিন্ন কারণে এই রোগ হতে পারে।
কারণ
এই রোগের নেপথ্যে অনেকগুলি কারণ রয়েছে। এই রোগ জিনগত হতে পারে। কিংবা অত্যাধিক স্ট্রেসের কারণ বা ডায়েটের কারণেও এই রোগ হতে পারে।
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া, যে কারণেই গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ইনফেকশন হোক না কেন, তার পরে কিন্তু পেটের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটিকে সংক্রামক পরবর্তী পেটের সমস্যা বলা হয়। গত দেড় বছরে আমরা এমন অনেকগুলি ঘটনা দেখেছি যেখানে কোভিড ১৯ থেকে সেরে ওঠার পরে রোগীদের পেটের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ধরণ
রোগীদের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা দু'ধরনের হতে পারে। প্রথমটি ডায়েরিয়া বা পাতলা মল, দ্বিতীয়টি কনস্টিপেশন বা পেট পরিষ্কার না হওয়ায় সমস্যা।
সমাধান
পেটের সমস্যা ঠিক কতটা তা আন্তর্জাতিক মানদন্ডের কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব। অনেকেই সাধারণ পেটের সমস্যাকে ক্যান্সার, যক্ষা, কোলাইটিসের মতো রোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে ভয় পান।
পেটের সমস্যার ক্ষেত্রে দুই ধরনের সমাধান রয়েছে। প্রথমটি এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, রোগীকে আশ্বস্ত করা যে এই রোগ মারাত্বক নয়। দ্বিতীয়টি হল, ডায়েটে বদল আনা।
আপেল, মিস্টি, ফুলকপির সবজি বা ফল যেগুলিতে ফ্রুকটোজ রয়েছে এবং হাই কার্বহাইড্রেট জাতীয় খাওয়ার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে ট্র্যানকুইলাইজার্স ব্যবহারের সঙ্গে কিছু যোগাসন বা ব্যায়ামের সুপারিশ করা হয়। পেটের সমস্যাকে দুই উপ প্রকারে ভাগ করে, সঠিক সমস্যা নির্ধারণ করে, তবেই নির্দিষ্ট ওষুধের থেরাপির সাহায্য নেওয়া উচিত।
ডায়েরিয়া না কোষ্ঠকাঠিন্য, না কী পেট ব্যথা, প্রত্যেকটি সমস্যার প্রবণতা বোঝার পরেই ওষুধের ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজনে ওষুধের পরিবর্তন করা হতে পারে পেটের ব্যথা কমানোর জন্য।
সব মিলিয়ে, পেটের সমস্যা অত্যন্ত সাধারণ একটি রোগ। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোগের লক্ষণ বুঝে তারপরেই ওষুধ খাওয়া উচিত এবং অবশ্যই সমাধান হিসেবে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে তো হবেই।
সূত্র: আনন্দবাজার।