ছবি: সংগৃহীত
চিকুনগুনিয়া-পরবর্তী ব্যথা দীর্ঘদিন থাকতে পারে। রোগ সেরে যাওয়ার পরও চলমান এই ব্যথা কমানোর জন্য সপ্তাহভিত্তিক ফিজিওথেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে হাত-পা ও অস্থিসন্ধির ব্যথা, আড়ষ্টতা ও দুর্বলতা ধীরে ধীরে কমানো যায়।
সপ্তাহভিত্তিক ফিজিওথেরাপি রুটিন
সপ্তাহ ১-২ (ব্যথা ও আড়ষ্ট কমানোর জন্য যা করবেন)
প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার গরম সেঁক। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অস্থিসন্ধিতে গরম পানি দিয়ে গরম সেঁক দিন।
ব্যথা বেশি থাকলে হালকা ঠান্ডা সেঁকও দিতে পারেন। রেঞ্জ অব মোশন (আরওএম) এক্সারসাইজ (ধীরে ধীরে)। হাতের আঙুলগুলো আস্তে আস্তে মুঠো করুন ও খুলুন ১০ বার।
কবজি ঘড়ির কাঁটার দিকে ও বিপরীতে ঘোরান ১০ বার।
গোড়ালি উঁচু করুন ও নিচে নামান ১০ বার।
হাঁটু ভাঁজ ও সোজা করার অনুশীলন ১০ বার, এ সময় ব্যথা বাড়লে বিশ্রাম নিন।
সপ্তাহ ৩-৪ (স্ট্রেচিং ও হালকা শক্তি বৃদ্ধির জন্য যা করবেন)
প্রতিদিন দুইবার আগের আরওএম এক্সারসাইজ চালিয়ে যাবেন এবং স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করতে হবে।
হাত ও পায়ের পেশি আস্তে আস্তে টানুন, ১০–১৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
পায়ের পেছনের পেশি (হ্যামস্ট্রিং) স্ট্রেচ করার জন্য চেয়ারে বসে পা সোজা করে রাখুন এবং হাত দিয়ে পায়ের আঙুল ছোঁয়ার চেষ্টা করুন।
কাঁধ স্ট্রেচ করার জন্য হাত ওপরে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে টান দিন। প্রতিটি স্ট্রেচ তিন থেকে পাঁচবার করুন।
সপ্তাহ ৫-৬ (পেশি ও অস্থিসন্ধির শক্তি বৃদ্ধির জন্য যা করবেন)
প্রতিদিন এক থেকে দুইবার হালকা রেজিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ করুন।
রাবার থেরাব্যান্ড ব্যবহার করে হাত টানার অনুশীলন।
পায়ের জন্য দেয়ালে ঠেলে রাখার অনুশীলন।
ব্যথা সহনীয় হলে দিনে ২০–৩০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন।
সপ্তাহ ৭-৮ (ফাংশনাল রিকভারি ফেজ)
দৈনন্দিন কাজ স্বাভাবিকভাবে করার চেষ্টা করুন।
হাঁটার গতি ও সময় বাড়াতে পারেন।
হালকা ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম ও যোগব্যায়াম করতে পারেন।
ব্যথা বেশি না থাকলে সিঁড়ি ব্যবহার করতে শুরু করুন।
বিশেষ সতর্কতা
ব্যায়াম করার আগে ও পরে হালকা গরম সেঁক নিন।
ব্যথা খুব বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ করে বিশ্রাম নিন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন।
ব্যথা ও ফোলা ভাব খুব বেশি হলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক খেতে পারেন। ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন, অতিরিক্ত ওজন থাকলে অস্থিসন্ধির ব্যথা বেশি হতে পারে।
সূত্র: প্রথম আলো।