জুলাই ১৭, ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, নিহত চারজনের মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না। একই সঙ্গে এনসিপির নেতা–কর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছে তারা।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করতে হবে। এনসিপির নেতা ও সমর্থকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি সমাবেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবিও আসকের।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, জনসাধারণের ওপর বল প্রয়োগ, গুলি চালানো ও প্রাণহানির ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড ও সংবিধান—উভয়ের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক পরিসর, মানবাধিকারের মূল্যবোধ এবং নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি একধরনের হুমকি। নাগরিকের জীবন রক্ষা রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব। গোপালগঞ্জের ঘটনায় রাষ্ট্র সে দায়িত্ব পালনে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।
বিবৃতিকে বল প্রয়োগ ও গুলির ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে আসক বলেছে, মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণভাবে সভা–সমাবেশ করার অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে নিশ্চিত মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের দায়িত্ব হলো এই অধিকার সুরক্ষা করা এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সময়ে উত্তেজনা প্রশমন ও মানুষের জীবন রক্ষা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং গুলির শব্দ স্পষ্টভাবে শোনা যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে আসক বলেছে, পুলিশের মহাপরিদর্শক গণমাধ্যমে বলেছেন পুলিশ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেনি। তাহলে এই আগ্নেয়াস্ত্র কারা ব্যবহার করল? আসক মনে করে, এ প্রশ্নের সুস্পষ্ট ও প্রামাণ্য ব্যাখ্যা দেওয়া না হলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, ভয় ও প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা আরও বাড়বে।
বিবৃতিতে দেশে স্থিতিশীলতা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযম, ধৈর্য ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে আসক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়ে আসক বলেছে, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পরবর্তী সময়ে যেন কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানি বা সহিংসতার শিকার না হন এবং নতুন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।