জুলাই ১৭, ২০২৫, ০৫:১৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের কাজে বাধা দেওয়াসহ নানা ধরনের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক জায়গায় বাংলাভাষীদের আটক করার কথাও শোনা যাচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা। বাংলাভাষীদের ওপর এ ধরনের নিপীড়ন মানতে রাজি নন তারা।
বাংলাভাষীদের হেনস্তা করার প্রতিবাদে গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মিছিলের আয়োজন করা হয় কলকাতায়। এ সময় হাজির ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অনেক শিল্পী। সে সময় অভিনেত্রী মমতা শংকর বলেন, ‘বাংলা আমার মাতৃভাষা। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলতে ভালোবাসি। তাই অনেক বৈঠকে বা সম্মেলনে আমি বাংলাতেই কথা বলেছি বা বলি। কিন্তু বিদেশি অভ্যাগতরা এলে তাদের জন্য বিদেশি ভাষার আশ্রয় নিতেই হয় বা বিদেশে গেলে আমি ইংরেজিতে কথা বলতে বাধ্য। কিন্তু নিজের দেশে অন্য ভাষাভাষীদের সঙ্গে হিন্দিতেই কথা বলার চেষ্টা করব। তার জন্য প্রতিবাদ, মারামারি বা খারাপ ভাষার প্রয়োগ কোনো দিন করব না।’
সংগীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী বলেন, ‘বাংলাভাষীদের হেনস্তা করার মতো ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়। যারা এ ঘটনা ঘটাচ্ছেন, তাদের তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। আর যারা এই পরিস্থিতির শিকার, তাদের জন্য আমার সহানুভূতি রইল। আমি নিজে একজন বাঙালি। এই ভাষা নিয়েই কাজ করি। যারা এই ভাষায় কথা বলছেন, তাদের সঙ্গে এ ঘটনা খুবই অনভিপ্রেত।’
অভিনেতা কৌশিক সেন বলেন, ‘দল-মতনির্বিশেষে এ বিষয় নিয়ে ভাবা উচিত। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটছে, তারা প্রত্যেকে গরিব মানুষ। তাদের অনেকের কাছে সঠিক নথিও নেই। বেশির ভাগ মানুষই পেটের টানে ভিনরাজ্যে গিয়ে কাজ করেন। তাদের সঙ্গে ঘটা এসব ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং চিন্তার।’
অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী বলেন, ‘মাতৃভাষা আমার প্রাণে। তা বলার জন্য যদি নির্বাসনে পাঠানো হয় বা শাস্তি দেওয়া হয়, তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। প্রতিবাদ হওয়া খুব দরকার। সব রাজনৈতিক দলেরই উদ্যোগী হওয়া উচিত, যাতে বাঙালিরা রাজ্যের বাইরে গিয়েও সুরক্ষিত বোধ করতে পারেন।’
অন্যদিকে বাংলাভাষীদের হেনস্তা হওয়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করছেন বিজেপি নেতা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশিদের লাগাতার ভোটার এবং আধার কার্ড পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে যে লুটের রাজত্ব মুখ্যমন্ত্রী কায়েম করেছেন, তাতে এ রাজ্যের গরিব বাঙালিরা ভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছেন। পড়াশোনা কম জানা বাংলাদেশি, যাদের বাংলার শ্রমিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মিশিয়ে দিয়েছেন। দিল্লি হাইকোর্ট স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, এদের তাড়াতে হবে। মমতা যে ঘৃণ্য রাজনীতি করছেন, তাতে দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হচ্ছে।’