ধৈর্য্য কি আসলেই সাফল্যের চাবিকাঠি?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

জুলাই ৩০, ২০২৩, ০৯:৪৭ পিএম

ধৈর্য্য কি আসলেই সাফল্যের চাবিকাঠি?

সংগৃহীত ছবি

ধৈর্য্য এমন একটা শব্দ, বাংলায় যা দুই বর্ণের হলেও আপনার-আমার জীবনে প্রতিটি পদে বিচরণ করছে। বিচরণের জায়গা আর কোথাও না, আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের মধ্যেই। ধরুন, সামনে আপনার পরীক্ষা, পড়তে হবে। কিন্তু আপনার পড়ার ধৈর্য্য হচ্ছে না ,ফোন ঘাটতে ইচ্ছা করছে কিংবা বাইরে ঘুরতে।

এমন পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় সবাই পড়ি। এখানে আপনার প্রথম সমস্যা হচ্ছে আপনি ঠিক কী কাজ করবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। দ্বিতীয়ত, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজটা কতটুকু সময়ে করবেন তা নিয়ে প্রচণ্ড সংশয়। 

ধরলাম আপনি পড়া বাদ দিয়ে ফোন ঘাটছেন,আবার চিন্তা করছেন পড়াশোনা হচ্ছে না অর্থাৎ আপনি আপনার বর্তমান কাজ করা নিয়েও হতাশ। সমস্যার শুরু ঠিক এইখানেই।

হতাশা এমন একটা মানসিক সমস্যা যা আপনাকে কোনো কাজ ধীর মানসিকতায় করতে দেবে না বরং বিভিন্ন কাজ থেকে ছুঁড়ে ফেলবে। এমতাবস্থায় মেডিটেশন বা যোগাভ্যাস কিন্তু খুবই কার্যকরী। শুধু মাত্র হতাশা কাটানোই না মনোযোগ স্থির থেকে শুরু করে ধৈর্য্য বাড়ানো এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব রাখে। 

তবে যেখানে সেখানে যোগাভ্যাসের চেষ্টা করলেই কিন্তু ফল পাওয়া যায় না। আপনার অবস্থানকৃত জায়গায় যে স্থান সবচেয়ে নিরিবিলি সেখানে যোগাভ্যাস করতে হবে। চেষ্টা করবেন রোজ একই জায়গায় যোগভ্যাস করার। এতে আপনার মনোযোগ ক্ষমতা বাড়বে এবং আপনার শৃঙ্খলা তৈরি হবে।

ধৈর্য্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে আত্মনিয়ন্ত্রণ খুবই বড় একটা ব্যাপার। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেয়ে বড় চেষ্টা আর কিছুই নেই। ধরুন আপনি কোনো বাজে পরিস্থিতিতে আছেন। নিজেকে প্রশ্ন করবেন, আপনি যে অবস্থায় আছেন তা কি আপনার নিয়ন্ত্রণে? 

যদি হ্যাঁ‌। তবে তা আপনার নিয়ন্ত্রণে। 

যদি উত্তর না হয় তবে কোথাও বসে আপনার মনোযোগ পরিস্থিতি থেকে বের করার চেষ্টা করুন বা এমন কিছু ভাবুন যেন আপনার রাগ ,ক্ষোভ কিংবা অস্থিরতা কমতে থাকে। কিংবা পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে শিখুন। অর্থাৎ যা হচ্ছে সেটা আপনি মেনে নিচ্ছেন এবং স্বেচ্ছায় পরিস্থিতিকে ছেড়ে দিচ্ছেন।

পরিবার বা বন্ধুদের সাথে আনন্দে থাকার চেষ্টা করুন। পরিবারকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করবেন । কারণ হাসি আপনার রাগ অবস্থাকে ক্ষীণ করবে এবং ধৈর্যশীল হতে শেখাবে।

অন্যের কথা শোনার চেষ্টা করুন ,তার বলা কথার অনুভূতি নিজে অনুভব করতে শিখুন। কারণ আবেগ এমন এক ইন্দ্রিয় শাখা যা মানুষকে সহজ হতে শেখায় , মানুষের সাথে আত্মস্থ হতে সাহায্য করে। সবসময় মনে রাখবেন পৃথিবীতে যাই হোক এটা শুধু মাত্র আপনার নয় বা আপনি ঘটিত নয়। যেটা আপনি অনুভব করছেন এর থেকেও ভালো বা খারাপ কিছু পৃথিবীর সব মানুষই অনুভব করছে। তাই নিজকেন্দ্রিক এই ধারণা বন্ধ করতে হবে। কারণ আত্মকেন্দ্রিক এই ধারণা মানুষকে অধৈর্য্য করে দেয়। যাকে আমরা স্বার্থপর বলে অভিহিত করে থাকি।

নিজের শেখার দক্ষতা বাড়ান। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন। তবে এর জন্য নিজের উপর কখনোই অতিরিক্ত চাপ নিবেন না। কারণ অতিরিক্ত চাপ আপনার কাজের মনোযোগ, সক্ষমতা, নষ্ট করে দেবে। যেকোনো কাজে হতাশা আসলে নিজেকে শাস্তি দেবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। নিজের সঙ্গে নিজেকে বোঝার পথ খুঁজুন। হতে পারেন নিজেই নিজের বিশ্বস্ত সঙ্গী।

আমরা জানি ধৈর্য্য মহৎ গুণ। তবে অতিমাত্রায় ধৈর্য্য অবশ্যই ক্ষতিকর। আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করে নতুন কিছু আরম্ভের চেষ্টা করতে হবে । দৈনন্দিন একটা রুটিন করে সেই নিয়মে চলার চেষ্টা করতে হবে । এতে করে আপনার ধৈর্য্য, মনোযোগ, কর্মক্ষমতা সবকিছুই বাড়বে। 

Link copied!