অনেক বাচ্চাই রয়েছে যারা কিছুতেই অন্যদের সঙ্গে মিশতে পারে না। একটু লাজুক প্রকৃতির। তাদের বন্ধুবান্ধবও কম। করোনাকালে অনলাইনে ক্লাসের যুগে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। কোনও অসুবিধা হলে তারা ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রশ্ন করতে পারে। পড়াশোনা বাদে অন্য কোনও বিষয়ে তাদের উৎসাহ নেই। তারা নিজের মতো একটা জগৎ তৈরি করে সেখানেই থাকতে পছন্দ করে।
সন্তানের এই ব্যাপারে বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। অন্য বাচ্চাদের তুলনায় তাঁদের সন্তান সব বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছে, এই ভয়ে তাড়া করে বেড়ায় তাঁদের। যে কারণে একটু বেশি বকাঝকাও করে ফেলেন তারা। তাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উল্টো ফল হয়। লাজুক বাচ্চাদের বাবা-মা হিসেবে বেশ কিছু জিনিস মানতে হবে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের লাইফস্টাইল বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কোনও ছকে বেঁধে দেবেন না
সন্তান খুব লাজুক-এ কথাটা সন্তানের বাবা-মায়ের বারবার বলা ঠিক হবে না। তাহলে ছোটরাও সেটা বিশ্বাস করে হীনমন্যতায় ভুগবে। অন্য কেউও যদি সেটা করেন, আপনি বাধা দেবেন। কেউ যদি বলে, ‘আসলে ছেলেটা খুব লাজুক’, আপনি শুধরে দিয়ে বলবেন, ‘না লাজুক নয়, আজ কম কথা বলছে’। এভাবে সন্তানের পক্ষে কথা বলা উচিত।
ওকে রক্ষা করার দায়িত্ব নেবেন না
কোথাও গেলে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে, সন্তানকে উত্তর দেওয়ার সময় দিন। যারা একটু লাজুক প্রকৃতির হয়, তারা নতুন লোকেদের কথার উত্তর চট করে দিতে পারে না। কিন্তু আপনি অপেক্ষা করে দেখুন, আপনার সন্তান কিছু বলছে কি না। যদি দেখেন ওর খুবই সমস্যা হচ্ছে, তাহলে বাড়িতে অবসর সময় নতুন মানুষদের সঙ্গে পরিচয় হলে যে ধরনের কথোপকথন হতে পারে, তা বাচ্চার সঙ্গে বলুন। খেলার ছলে এ বিষয়টি বাবা-মা অভ্যাস করলে তা সন্তানের জন্য খুবই ভাল হবে।
ওর প্রকৃতি মেনে নিন
সব বাচ্চারা একই ধরণের হয় না।সকলের বেড়ে ওঠাও ভিন্ন রকম হবে-এটাই স্বাভাবিক। কেউ লাজুক মানেই জীবনের সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে এমন নয়। বরং যা আপনার সন্তান করতে ভালবাসে, সেদিকে নজর দিন। ওকে উৎসাহ দিন সব রকম কাজেই। নিজের জগতে থাকতে দিন। তাহলে ওদের কল্পনাশক্তি বাড়বে।
অনুষ্ঠানবাড়িতে একটু আগে পৌঁছান
কোনো নতুন পরিবেশে যেতে হলে তা মানিয়ে নিতে আপনার সন্তানের সমস্যা হলে তাকে ওই পরিবেশ সম্পর্ক গল্প বলুন। কোনও পার্টিতে যাওয়ার হলে, যাওয়ার আগে সন্তানকে বলুন কাদের বাড়ি যাচ্ছেন, কারা আসবেন, কী হবে, কখন ফিরবেন— এগুলি আগে থেকে সন্তানের সঙ্গে আলোচনা করে নিন। অনুষ্ঠান শুরুর সামান্য আগে পৌঁছে যান। যাতে সে একটু সময় পায় মানিয়ে নেওয়ার।