নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়ে আপত্তির অপেক্ষায় ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ১২:৪১ এএম

নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়ে আপত্তির অপেক্ষায় ইসি

ফাইল ছবি

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিয়ে কোনো ধরনের আপত্তি বা দাবি থাকলে তা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। যার ফলে যে কেউ পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য বেসরকারি সংস্থাসমূহের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারবেন।

যেভাবে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে আপত্তি জানাবেন

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিয়ে আপত্তি জানাতে হলে অবশ্যই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন (সোমবার) থেকে নির্ধারিত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আগারগাঁও,ঢাকা বরাবর লিখিতভাবে আপত্তি জানাতে হবে । তবে যে প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর অভিযোগ তার স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আপত্তিকারীর নাম , ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখপূর্বক ০৬ (ছয়) সেট আপত্তি দাখিল করতে হবে । আপত্তির শুনানী শেষে তা গ্ৰহন বা বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত প্রদান করা হবে । । এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে । উল্লেখ্য, গনবিজ্ঞপ্তিটি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd) পাওয়া যাবে।

যাদের বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো যাবে

তবে এবার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ মূলে প্রকাশিত ২য় বিজ্ঞপ্তির আলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে আবেদন করেছে ২৯টি সংস্থা।

সংস্থাগুলো হলো ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দি রুরাল পুওর -ডরপ,প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, হোসাইন ফর রুরাল বেসিক নীড-স্রাবন, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন,ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম,রুরাল ভিশন(আরভি),তরফসরতাজ শান্তি সংঘ(টিএসএস),পিপলস এসোসিয়েশন ফর সোস্যাল এডভান্সমেন্ট(পাশা),পাথওয়ে, এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অফ দ্য কমন পিপল (এলকপ),জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট,নাইস ফাউন্ডেশন,নারী উন্নয়ন সংস্থা, সুফিয়া হানিফ ফাউন্ডেশন,সোস্যাল এ্যাডভান্সমেন্ট কমিউনিটি অর্গানাইজেশন (সাকো),সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশন (এসটিএএফ),বিয়ান মনি সোসাইটি,অগ্ৰগতি সেবা সংস্থা,আল-কুরআন প্রচার সংস্থা (আকপস) বাংলাদেশ,ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন,এআরডি (এসোসিয়েশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট), বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ (বামাসপ),রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থা,সংগতি সমাজ কল্যাণ সংস্থা,উদ্ভাবনী মহিলা সংস্থা,ভলান্টারী অর্গানাইজেশন ফর দি নীতি (ভন), দিনাজপুর পল্লী উন্নয়ন প্রচেষ্টা (ডিপিইউপি),সেলফ ডেভেলপমেন্ট ইনিসিয়েটিভ ( এসডিআই),বেডো আর্থ সামাজিক কেন্দ্র।

পর্যবেক্ষক নিয়ে যে যে আপত্তি জানানো যাবে

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০১৭ অনুসারে নিবন্ধিত কোন পর্যবেক্ষক সংস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বা শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে জড়িত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত বা প্রতিবেদনের আলোকে উক্ত সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করা হবে।

এদিকে নিবন্ধিত কোন সংস্থা পরপর দুটি সাধারণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করলে নির্বাচন কমিশন তার নিবন্ধন বাতিল করিতে পারবে।

কোন রাজনৈতিক দল বা অঙ্গসংগঠনের সাথে যুক্ত থাকলে তারা পর্যবেক্ষক হতে পারবে না।

নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা কি সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রভাব রাখে?

নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা কোনো একটি নির্বাচন শেষে প্রতিবেদন দেন যে সেই নির্বাচনটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলো কিনা। অর্থাৎ একটি নির্বাচন গুণগতভাবে কতটা বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে, সেই বিষয়টি উঠে আসে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনে।

তবে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন সাধারণত নির্বাচনের ফলাফল বা নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে তেমন প্রভাব ফেলে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও রয়েছে। ২০১৭ সালে কেনিয়ায় নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মত দিলেও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনে উঠে আসে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। পরে আদালত এই পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন আমলে নেন এবং কেনিয়ায় পুনর্নির্বাচন হয়।

এদিকে ২০০৩ সালে আর্মেনিয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রেও পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন আদালতে আমলে নিয়েছিল।

Link copied!