একদিনে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১২৩ ডেঙ্গু রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ২৭, ২০২১, ০১:০০ এএম

একদিনে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১২৩ ডেঙ্গু রোগী

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে নতুন সংকট তৈরি করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার (২৬ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১২০ জন। অন্য ৩ জন  ঢাকার বাইরের।

সোমবার (২৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৬৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৮০২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১ হাজার ৩৩১ জন। আর মারা গেছেন ৩ জন।  

রবিবার (২৫ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১০৫ জন। অর্থাৎ গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা রোগী বেড়েছে ১৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে ৫৯ জন,  ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২২ জন, মগবাজারের আদ দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৩ জন, কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৫১ জন, খিদমা হাসপাতালে ২৫ জন, ধানমন্ডির সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৩৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ঢাকার ১২টি সরকারি ও ২৯টি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানা গেছে। 

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানীতে চলতি সপ্তাহেই ফের অভিযান শুরু হচ্ছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামও রবিবার (২৫ জুলাই) একই কথা বলেছেন।

রবিবার (২৫ জুলাই) ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ডাকা জরুরী সভায় তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এডিসসহ অন্যান্য মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে যে এলাকায় অর্থাৎ যে বাসা-বাড়িতে রোগী পাওয়া যাবে হাসপাতাল থেকে সেই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা নিয়ে তার বাসাসহ ওই অঞ্চল চিহ্নিত করে বিশেষ চিরুনি অভিযান চালানো হবে।’

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আরও বলেন, নিয়মিত মশক নিধন অভিযানের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি যে হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার আমাদের সেলে এবং সিটি কর্পোরেশনে পাঠালে ঐ ব্যক্তির বাসা-বাড়ি চিহ্নিত করে পুরো এলাকায় বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য উভয় সিটি কর্পোরেশনে দশ জন করে ম্যজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে জানিয়ে ওই বৈঠকে মন্ত্রী আরও বলেন, জেল-জরিমানা করার পরও বাসা-বাড়ি অথবা ভবনে পুনরায় দুই-তিনগুণ মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রবিবার (২৫ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত এক হাজার শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক একথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে নতুন সংকট তৈরি করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। যাদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডেঙ্গু রোগীদের জন‌্য সুনির্দিষ্ট হাসপাতাল ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।’

Link copied!