নিরপেক্ষ থাকায় ঢাকার প্রতি কৃতজ্ঞ মস্কো: রুশ রাষ্ট্রদূত

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৫, ২০২২, ১২:১২ এএম

নিরপেক্ষ থাকায় ঢাকার প্রতি কৃতজ্ঞ মস্কো: রুশ রাষ্ট্রদূত

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের জরুরি অধিবেশনে উত্থাপিত নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকে বাংলাদেশ নিরপেক্ষতা বজায় রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকাস্থ রাশিয়া দূতাবাস আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ওয়ান মান্থ অব দ্য রাশিয়াস স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন ইন ইউক্রেন: কজেস রেজাল্টস, দ্য ওয়ার্ল্ড অব পোস্ট-ট্রুথ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জোর দেন মান্টিটস্কি।

পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমি, যুদ্ধ এড়ানোর জন্য রাশিয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অপারেশনের ফল, ইউক্রেনে পশ্চিমাদের সামরিকীকরণ ও নাৎসীকরণ, যুদ্ধের অর্থনৈতিক পরিণতি এবং নতুন বাস্তবতায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক।

গত ২ মার্চ রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়, তাতে বাংলাদেশের দেয়া ভোট প্রসঙ্গে রাশিয়ার দূত প্রস্তাবের বিষয়ে বাংলাদেশের ‘দায়িত্বশীল এবং ভারসাম্যপূর্ণ’ অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, “কথিত ভোটের সময় বাইরের প্রচণ্ড চাপ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ নিস্ক্রিয় অবস্থান নেয়। এ জন্য বাংলাদেশের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল। এ সম্পর্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন খুব সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। সুতরাং, এ বিষয়ে বাড়তি কিছু বলার নেই।”

ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মান্টিটস্কি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য কমানো নয়, বাড়াতে আগ্রহী রাশিয়া। এ মুহূর্তে পশ্চিমা অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের সরকারের চাপে রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।”

রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশের অংশীদারদের জন্য অবিশ্বস্ত অংশীদারেরা দূরে সরে গিয়ে এক দারুণ সুযোগ তৈরি করেছে।’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই জানিয়ে মান্টিটস্কি বলেন, “ আমরা বুঝতে পারি, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা রয়েছে। এখন পর্যন্ত সব কাজ নির্ধারিত সময় ধরেই এগোচ্ছে। কাজেই প্রকল্প শেষ করার জন্য আগে যে সময়সীমা ঠিক করা হয়েছিল, সে অনুযায়ী তা হবে।”

রাশিয়া থেকে কেনা গম ও জ্বালানির দাম বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার এই রাষ্ট্রদূত বলেন, “সরবরাহের বিষয়ে রাশিয়ার যে বাধ্যবাধকতা, সেটা পূরণ করা হবে। বাড়তি চাহিদা নিয়ে মধ্যস্বত্বভোগী ও কিছু গণমাধ্যম জনগণের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেওয়ায় এখানে পণ্যের মূল্য বেড়ে গেছে।”

পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে দুর্বল করতে পারবে না উল্লেখ করে মান্টিটস্কি আরও বলেন, “অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতিতে ধস নামবে না। ইতিহাসের নানা পর্বে সংকট মোকাবিলা করেই রাশিয়া এগিয়েছে। এখনকার পরিস্থিতি ভালোভাবে মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াবে রাশিয়া।”

Link copied!